ছেলে শিশুদের কিভাবে চিন্তাশিল এবং বিবেকবান হিসেবে গড়ে তুলবেন
সন্তানদের চিন্তাশীল বা Thoughtful, বিবেকবান এবং মানুষের মত মানুষ হিসেবে গড়ে তোলা এমনিতেই কষ্টকর। কোন কোন ছেলে বাচ্চারা খুব মিশুক প্রকৃতির হয় আবার কোন কোন ছেলেরা হয় ঘরকুনো। সারাদিন ভিডিও গেম অথবা কার্টুন নিয়েই পরে থাকে। আবার কেউ কেউ এতই চঞ্চল হয় যে তাদের দমিয়ে রাখাই যাআপনার ছেলে শিশুটি যেমনই হোক না কেন নিচে বর্ণিত ১০ টি টিপস আপনার ছেলেকে একজন হাসিখুশি এবং দায়িত্ববান মানুষ হিসেবে গড়ে উঠতে সহায়তা করবে।
১. তাকে মাঝে মাঝেই ঘরের কিছু কিছু কাজের দায়িত্ব দিন। ছেলে বাচ্চারা ইন্সট্রাকশন ফলো করে কোন কাজ করার ক্ষমতা একটু দেরিতে ডেভেলপ করে। তাই তার মধ্যে এই গুণাবলির বিকাশ ঘটানোর জন্যে তাকে ছোটখাট কাজ করার অভ্যাস করান। যেমন- রান্নাঘর থেকে চামচ নিয়ে আসা, বাসায় পোষা কুকুর বা বিড়াল থাকলে তাকে নিয়মিত খাবার দেয়া এবং দেখা শুনা করা, ছোট ভাই-বোন থাকলে তাদের দেখাশোনা করা ইত্যাদি।
২. তাকে তার আবেগ প্রকাশের সুযোগ দিন। অনেকেই মনে করেন যে ছেলেদের কাঁদতে নেই, তাদের নিজের আবেগকে নিয়ন্ত্রণ করে রাখা উচিৎ। যা একদমই সঠিক নয়। প্রত্যেক মানুষেরই উচিৎ তার আবেগের পরিপূর্ণ প্রকাশ ঘটানো। সে ছেলে হোক কিংবা মেয়ে। তাই আপনার ছেলে যদি কখনো কোন কারণে বিষণ্ণ থাকে ,যার কারণে সে কান্নাকাটি করে তাহলে তাকে কাঁদতে দিন। কখনই তার উপর কোন প্রকারের চাপ দিবেন না। তাকে স্বাভাবিক হওয়ার একটু সময় দিন । তারপর তার সাথে কথা বলুন।
৩. তাকে প্রচুর ফিজিকাল অ্যাফেকশান দিন অর্থাৎ আদর করুণ। কপালে চুমু খান, জড়িয়ে ধ্রুন। গবেষণায় থেকে দেখা গেছে যে, ছোটবেলা থেকেই মেয়ে শিশুরা বাবা মায়ের কাছ থেকে যে পরিমাণ ফিজিকাল অ্যাফেকশান পায়, সেই তুলনায় ছেলেরা পায় না। তাই তারা যখন বড় হয় তখন তাদের মধ্যে আদর দেয়া বা নেয়া জিনিসটি কম কাজ করে।
৪. সাধারণত ছেলে শিশুরা একটু বেশি এনারজেটিক হয়। তারা যদি পর্যাপ্ত খেলাধুলা কিংবা দৌড়াদৌড়ী করার সুযোগ না পায় তাহলে শারীরিক কিছু সমস্যার দেখা দিতে পারে। কিন্তু এটাও খেয়াল রাখবেন সে যেন যেখানে সেখানে দৌড়াদৌড়ী না করে। তার খেলাধুলা করার জন্যে একটি নির্দিষ্ট স্থান ঠিক করে দিন।
৫. আপনার ছেলে যদি রাতে ঘুমানোর সময় তার ফেভারিট পুতুলটিকে জড়িয়ে ধরে ঘুমোতে চায় তাহলে তাকে তাই করতে দিন। জোড় করে তাকে এমন কিছু করতে বাধ্য করবেন না যা সে করতে চায় না। আমাদের সমাজের খুব খারাপ একটা দিক হল হুট করে ছেলেদের আবেগময় আচরনকে “মেয়েলিপনার” তকমা লাগিয়ে দেয়া। কিন্তু আপনি মেনে নিন আর নাই নিন এটা বিভিন্ন গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে ছেলেদের ভেতরই আবেগ কাজ করে মেয়েদের মতোই।
৬. ছেলেরা প্রায় সময়ই গ্রুপে খেলতে পছন্দ করে। মেয়েরা যত সহজে একজনের সাথে খুব গভীর বন্ধুত্ব করতে পারে ছেলেরা তা করতে চায় না। আপনার সন্তানকে তাই গ্রুপে খেলতে দেয়ার পাশাপাশি, বাসায় ছোট Play Date (কোন একটা বাসায় বা জায়গায় বাচ্চাদের একসাথে খেলার এবং সময় কাটানো সুযোগ করে দেয়া) ব্যবস্থা করুন, যেন সে অন্য বাচ্চার সাথেও একা মেলামেশা করতে পারে
৭. গবেষণায় দেখা গেছে, মিউজিকাল যন্ত্রপাতির ব্যবহার মানুষকে কৃতিত্ববোধের এক অন্যরকম অনুভূতি দান করে। এটি তাদের চিন্তাশিলতা এবং স্মৃতি শক্তির উন্নতি ঘটাতেও সাহায্য করে।
৮. তার পছন্দের গুরুত্ব দিন। সে যদি এমন কিছু করতে পছন্দ করে যা সচরাচর ছেলেরা করে না, সেক্ষেত্রেও তাকে উদ্বুদ্ধ করুন তার পছন্দের কাজটি করতে। হয়তো তার বন্ধুরা তাকে এ ব্যাপারে ক্ষ্যাপাতে পারে তাও তাকে পিছু হটতে বলবেন না। তাকে মানসিকভাবে সাহস দিন এবং উদ্বুদ্ধ করুন। এতে সে আত্মবিশ্বাসী হবে।
৯. আপনার ছেলে স্কুলে কেমন করছে তা তার শিক্ষকদের কাছ থেকে খোঁজ খবর নিন। স্কুলে সে কোন জিনিসটি খুব ভালভাবে করছে এবং কোন জিনিসটিতে সে দুর্বল, সে ব্যাপার গুলি সম্পর্কে জেনে নিন। বাসায় তার হোম ওয়ার্ক করতে সাহায্য করুন এবং ছোটবেলা থেকেই গল্পের বই পড়ার অভ্যাস করান।
১০. দেখা যায় বাসায় এবং স্কুলে ছেলেদের বেশি বকাবকি করা হয় মেয়েদের তুলনায়। এর পেছনে কারণ অবশ্যই থাকতে পারে কিন্তু বাচ্চাদের বকাঝকা করে কোন লাভ নেই। তারা কি ভুল করেছে তা যদি বুঝতেই পারত তাহলে সে ভুল করতোই না। তাই বকা দেয়ার পরিবর্তে তাকে ভালো কাজে উদ্বুদ্ধ করলে বেশি লাভজনক হবে। তার ভাল দিক গুলির প্রশংসা করুন। তার দোষগুলি ধরিয়ে দিন এবং ভাল কাজের জন্যে ছোট ছোট পুরস্কারের ব্যবস্থা করুন।
সন্তানের সৃজনশীলতার চর্চা করান কিডসটাইমের কোর্সে।কিডসটাইমের কোর্স গুলো দেখতে ভিজিট করুন নিচের লিংকে :