ToguMogu
ToguMogu
article.title
 Oct 24, 2023
 1541

দুধ প্রোটিনের অন্যতম উৎস

প্রতিবেশী হবার সুবাদে ছোট থেকেই এক সাথে বেড়ে উঠেছে মোহনা ও রিতু। দুই মেয়ের বন্ধুত্ব ছড়িয়ে পড়েছে দুই পরিবারেই। তাই তো তাদের জামা, জুতা থেকে শুরু করে নিত্যদিনের খাদ্যাভাস, সবকিছু একসাথে পরিকল্পনা করে ঠিক করেন দুই মা।

তারপরও দেখা যায় মোহনার তুলনায় রিতু বরাবরই একটু বেশি দূর্বল। সদা চঞ্চল বাচ্চা দু’টি সারাক্ষণ একসাথে থাকলেও দিনশেষে রিতুই বেশি কাহিল হয়ে পড়ছে। জন্মসূত্রেই কোনো সমস্যা কিনা জানতে চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া হলে জানা যায় এমন কিছুই না!

  • Test Bullet Point -1
  • Test Bullet Point -2

তবুও এমন কী আছে যা মোহনাকে বেশি উদ্যমী করছে জানতে গিয়ে দেখা যায়, ছোট থেকেই দুধ বেশ প্রিয় তার। প্রতিদিনই ১ বা ২ গ্লাস দুধ পান করে মোহনা। অন্যদিকে রিতুকে জোরপূর্বক সপ্তাহে ২ বা ৩ গ্লাস দুধ পান করানো যায় না।

 

শিশুকাল থেকেই দুধ আমাদের জন্য অত্যাব্যশকীয় একটি খাবার। এ কারণেই জন্মের পর থেকে দুধই একটি শিশুর পুষ্টির এবং বেড়ে ওঠার প্রধান উৎস। মাতৃগর্ভ থেকেই দুনিয়াতে পদার্পণের পর আমাদের প্রথম ও প্রধান খাদ্য মায়ের বুকের শালদুধ।

 

এর কারণ জানেন? কোলোষ্ট্রাম সমৃদ্ধ শালদুধ মায়ের দেহ হতে রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা নবজাতকের দেহে নিয়ে যায়। এতে প্রোটিন ও ল্যাক্টোজসহ অন্যান্য অনেক পুষ্টি উপাদান আছে। যা শিশুর রোগাক্রান্ত হবার ঝুঁকি কমায়।

 

এতো গেল একদম জন্ম পরবর্তী সময়ের কথা। এখন আসি এর পরের সময়টি নিয়ে। একটি বাচ্চা আস্তে আস্তে বড় হয়৷ নির্দিষ্ট সময় পর সে মায়ের দুধ ছাড়াও অন্যান্য খাবার খাওয়া শুরু করে। সে সময়ে প্রোটিন দেহের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একটা উপাদান। যা পূরণের জন্য পৃথিবীর সব খাদ্যের সেরা খাদ্য দুধ।

 

দুধের অপরিহার্য উপাদান ল্যাকটোজ। যা দৈহিক গঠন, বিকাশ ও মেধা বৃদ্ধিতে সহায়ক। দুধ এতোটাই উপকারী যে, এটি আমাদের মৌলিক খাদ্য করা উচিৎ। তা না করে দুধকে আমরা বিলাসী খাদ্যের তালিকায় বন্দী রেখেছি।

 

বাংলাদেশে সাধারণত গরুর দুধই সবচেয়ে বেশি পান করা হয়। গরুর দুধে আছে অত্যাবশ্যকীয় অ্যামাইনো অ্যাসিড, বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন, খনিজ পদার্থ যেমনঃ ক্রোমিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ, আয়রন, কোবাল্ট, কপার, জিংক, আয়োডিন ও সেলিনিয়াম। তাই বলা যায়, গরুর দুধ ব্যাপক পুষ্টির আধার ও প্রোটিনের অন্যতম প্রধান উৎস।

 

অথচ আমরা এতো মূল্যবান একটি খাবার না খাইয়ে আমাদের সন্তানদের দিচ্ছি প্যাকেটজাত গুঁড়া দুধ! অনেকেই আবার আদর করে সন্তানের হাতে তুলে দেয় চিপস, চকলেট, জুস, আইসক্রিমের মতো সব খাবার। যার মধ্যে কোনো পুষ্টিগুণ তো নেইই, বরং আমাদের অজান্তেই বাচ্চাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমিয়ে, শিশুদেহে ঢুকছে নানা মরণব্যাধির উপকরণ।

 

শুধু শিশুদের জন্যই নয়, একজন পূর্ণবয়স্ক মানুষের দেহের ক্ষয় পূরণ, কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি করতে, দেহকে সুস্থ সবল রাখতে দুধের কোনো বিকল্প নেই। কেননা দেহের বৃদ্ধি, কোষ গঠন ও ক্ষয়পূরণ হল প্রোটিনের প্রধান কাজ। আর দুধ প্রোটিন লাভের অন্যতম উৎস।

 

দুধে যে প্রোটিন থাকে তা খারাপ কোলেস্টেরল কমিয়ে ভালো কোলেস্টেরলের মাত্রা বৃদ্ধি করে। রাত্রে হালকা গরম দুধ খেয়ে ঘুমাতে গেলে, পরদিন আপনার এনার্জি লেভেল আপনিই অবাক হয়ে যেতে পারেন। যেহেতু দুধের মধ্যে প্রোটিন এবং ল্যাক্টিন রয়েছে, তা আপনাকে রিল্যাক্স করতে সাহায্য করে। ফলে আপনি সকালে বেশ তরতাজাভাবে ঘুম থেকে উঠতে পারবেন।

 

মানবদেহের হাড়ের ৫০ শতাংশই প্রোটিন দ্বারা গঠিত; দাঁতের এনামেল ক্ষয়রোধেও প্রয়োজন নানা প্রকার প্রোটিন। দুধে উপস্থিত ক্যাসেইন দাঁতের এনামেল রক্ষায় অপরিহার্য। প্রোটিনে ভরপুর দুধে দেহের সুষ্ঠু বিকাশের জন্য প্রয়োজনীয় নয়টি অ্যামাইনো এসিডের সবগুলোর উপস্থিতির কারণে একে বলা হয় ‘স্বয়ংসম্পূর্ণ প্রোটিন’।

 

রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে এবং নানাবিধ হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে প্রয়োজন পর্যাপ্ত পরিমাণ ভেজিটেবল প্রোটিন, যা দুধে বিদ্যমান। নিয়মিত দুধ পান করলে দেহে প্রোটিনের ঘাটতি পূরণ হয় এবং উচ্চমান সম্পন্ন প্রোটিন ও অ্যামাইনো এসিড সরবরাহ হয়, যা রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে ভূমিকা রাখে।

 

দুধে উপস্থিত উচ্চমানের প্রোটিন শরীরে প্রচুর শক্তি যোগায়। ফলে দীর্ঘ সময় আর ক্ষুধা অনুভব হয় না এবং প্রাকৃতিকভাবেই অতিরিক্ত আহার কমে যায়। তাই যারা ওজন নিয়ন্ত্রণের জন্য ভাবছেন, তাদের জন্য দুধ আবশ্যক।

 

সুতরাং বুঝতেই পারছেন প্রোটিনের চাহিদা পূরন করা কতোটা জরুরি। নিয়মিত দুধ পানের অভ্যাস করা ছাড়া আমাদের স্বাস্থ্য ঝুঁকি কমানোর সুযোগ খুব কম। অথচ চাইলেই কিছু সহজ অভ্যাসের মাধ্যমে কিন্তু আমাদের দেশে ভিন্ন চিত্র তৈরি করা যায়।

 

যেমন আমরা কারো বাসায় যখন যাই, তখন রং মেশানো পানীয় বা অন্যান্য মুখরোচক অস্বাস্থ্যকর খাবার না নিয়ে, দুধ নিতে পারি। কারণ দুধের অভাবে যে স্বাস্থ্যগত ক্ষতি হয়, তা কখনো অন্য খাবার খেয়ে পুষিয়ে দেওয়া যাবে না।

 

তবে যে সময় এসেছে! এতো পুষ্টি-গুনে সমৃদ্ধ পানীয় (দুধ) পানের ক্ষেত্রেও দ্বিধা করেন অনেকে! কারণ আর কিছুই নয়, খাঁটি দুধের অভাব! তবে এ ব্যাপারে ভরসা দিচ্ছে খাস ফুড। 

 

খাস ফুড ঢাকার আশেপাশের এলাকার প্রান্তিক পর্যায়ের খামারিদের কাছ থেকে নিজেদের তত্ত্বাবধানে গরুর দুধ সংগ্রহ করে। সংকর জাতের এ গরুগুলোর দুধ সংগ্রহের পরই প্যাকেট করে ডিপ ফ্রিজে সংরক্ষণ করা হয়।

 

এছাড়াও খাস ফুডের রয়েছে সহজ “রিটার্ন পলিসি”। অর্থাৎ কোনো কারণে যদি খাস ফুডের দুধ ক্রেতাদের মনমতো না হয়, তবে উপযুক্ত প্রমান দিয়ে ফেরত দেওয়ার সুযোগ। 

 

আমাদের দেশের কোটি কোটি মানুষ আজ অপুষ্টিতে ভুগছে। ফলে দূর্বল দেহে বাসা বাঁধছে বিভিন্ন দুরারোগ্য ব্যাধি। তাই আসুন আমরা সকলে সময় থাকতে সচেতন হই। নিয়মিত দুধ পানের অভ্যাস গড়ে তুলি।

ToguMogu App