প্রতিদিন সকালে উঠেই মায়েরা যেন এক আতঙ্কে পড়ে যান সন্তানের নাস্তা বা খাবার নিয়ে। আর সন্তানের বয়স যদি হয় এক থেকে পাঁচ এর মধ্যে তাহলে তো কথায় নেই। কারণ এই বয়সেই শিশুর খাবার নিয়ে সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়তে হয় মায়েদের। এই চিন্তা পুরোপুরি দূর করা সম্ভব না হলেও কিছু উপায় অবলম্বন করে হয়ত কিছুটা কমিয়ে আনা যায়।
সকালে শিশুদের নাস্তায় অনেকেই অনেক রকম পন্থা অবলম্বন করেন। আবার কেউ কেউ হয়ত খুঁজেই পান না যে বাচ্চাকে কি কি খাবার খাওয়ানো যায়। সেই সাথে অনেক বাচ্চারা সকালে কিছু খেতেও চায়না। সেক্ষেত্রে তাদেরকে কেমন খাবার দেওয়া যেতে পারে চলুন জেনে নিই।
তবে মাথায় রাখবেন, শিশুদেরকে একেক দিন একেক রকম খাবার দিলে তারা আগ্রহ নিয়ে খায়।
আপনার শিশুর বয়স যদি হয় ৬মাস থেকে ১ বছর তাহলে তার জন্য উপযুক্ত কয়েকটি খাবার হলো-
খিচুড়ি- নরম করে রান্না করা খিচুড়ি শিশু অনায়াসেই খেতে পারে সকালের নাস্তায়। খিচুড়ি এমন একটি খাবার যার মধ্যে প্রায় সব ধরনের পুষ্টি উপাদানই থাকে। সকালে ভরপেট খিচুড়ি খেলে শিশুরা সারাদিন প্রচুর এনার্জি পাবে সেই সাথে খাবার সঠিকভাবে হজম হওয়ারও সময় পাবে। এতে করে শরীর সুস্থ এবং কর্মচঞ্চল থাকে।
ওটস- ওটস দিয়ে কলা কিংবা ডিম দিতে পারেন। ওটস দুধের মধ্যে ২/৩ মিনিট জাল করে নরম হয়ে এলে নামিয়ে পরিবেশন করতে হবে। ছোট বাচ্চাদের জন্য চিনি ব্যবহার করার পরিবর্তে মধু কিংবা খেজুরের গুঁড়া দিয়ে রান্না করতে পারেন।
দুধ-রুটি- দুধের মধ্যে রুটি ভিজিয়ে বাচ্চাদের খাওয়ানো যায়। এটি সহজে হজম হয় এবং বাচ্চারা পছন্দ করে খায়।
সুজির হালুয়া- ঘরে তৈরি সুজির হালুয়া ছোট বাচ্চাদের জন্য একটি উত্তম খাবার।
ফলের পিউরি- বিভিন্ন ফলের পিউরি বাচ্চাদের জন্য একটি পুষ্টিকর খাবার। তবে সকাল বেলা সরাসরি কিংবা খালি পেটে ফলের কিছু না দিয়ে অন্যান্য খাবারের সাথে এটি দিতে পারেন।
এগুলো তো গেল ৬মাস থেকে এক বছরের বাচ্চার খাবারের ধারনা।
এখন আসি ১ বছর থেকে ৩ বছরের শিশুদের খাবার কেমন হওয়া উচিত।
খিচুড়ি- এই বয়সের বাচ্চাদের জন্যও খিচুড়ি একটি আদর্শ খাবার।
পাস্তা অথবা নুডুলস- সকালের নাস্তায় আপনার সন্তানকে দিতে পারেন পাস্তা অথবা নুডুলস। তবে কখনই এগুলোর প্যাকেটে থাকা এক্সট্রা মশলা বা টেস্টিং সল্ট ব্যবহার করবেন না। নুডুলসের মধ্যে ডিম গুলে দিতে পারেন সাথে কিছু সবজি। এতে শিশুর ডিমের চাহিদা পূরণ হবে সেই সাথে সবজিতে থাকা খনিজ লবণ ও ভিটামিনের প্রয়োজনীয়তা পূরণ হবে।
রুটি-সবজি- এই বয়সী বাচ্চাদের প্রায় সবারই দাঁত উঠে যায়। তাই এখন আপনি তাকে সবজি, ডিম কিংবা হালুয়া দিয়ে রুটি দিতে পারেন।
খেজুর,বাদাম ও অন্যান্য- শিশুদের জন্য খেজুর, বাদাম এবং অন্যান্য শুকনো ফলের উপকারিতা অত্যধিক। তাই চেষ্টা করুন নিয়মিত সন্তানকে এসব খাবার খাওয়াতে।
এগুলো ছাড়াও আরও নানা প্রকার খাবার আপনি আপনার সন্তানকে দিতে পারেন। চেষ্টা করুন সকালের নাস্তার সাথে যেকোনো একটি ফল অথবা ফলের রস দিতে। অবশ্যই সব সময় শিশুকে ঘরে তৈরি খাবার খেতে দিন। এছাড়া আপনি প্রতিদিন যে খাবার খান, চেষ্টা করুন শিশুকেও সেসব খাবারের সাথে অভ্যস্ত করতে। তবে খেয়াল রাখবেন, আপনার দেওয়া খাবারে যেন তার সব ধরনের পুষ্টির চাহিদা পূরণ হয়।