ToguMogu
ToguMogu
article.title
 Jun 10, 2019
 5063

আপনার কন্যা সন্তানকে আত্মবিশ্বাসী হিসেবে গড়ে তুলতে ১০ টি টিপস

ছোটবেলায় মেয়ে শিশুরা ছেলেদের তুলনায় সব কিছুতে এগিয়ে থাকে। হোক তা কথা বলা কিংবা হাঁটতে শিখা বা পড়াশুনা সবকিছুতেই তারা টপার থাকে। কিন্তু প্রাইমারী স্কুলের ধাপ পেরোনোর পর তাদের মধ্যে কিছু পরিবর্তন আসা শুরু করে যা তাদেরকে অনেকটায় পিছিয়ে ফেলে। এর কারণ যেকোনো কিছুই হতে পারে। সমাজ ও পরিবার উভয়ই আমাদের কন্যা সন্তানের বিপরীতে থাকে। সামাজিকভাবে এখনও মনে করা হয় মেয়েরা ছেলেদের সমান নয়, মেয়েদের ছেলেদের সমান স্বাধীনতা প্রাপ্য নয়। যদিও মেয়েরা সব ক্ষেত্রেই নিজেদের প্রমাণ করে চলেছে তবে তাদের এই যাত্রাটা সহজ নয়। এই দীর্ঘ যাত্রাপথে তাদের অনেক রকম বাঁধা পেরোতে হবে। সেজন্যে সব থেকে বেশি যা দরকার তা হচ্ছে আত্মবিশ্বাস। আর সন্তানকে Confident হিসেবে গড়ে তুলতে হবে শিশুকাল থেকেই। নিচে আপনার কন্যা সন্তানকে জীবনের কঠিন সময়গুলিতে সকল বাঁধা মোকাবেলা করার জন্যে আপনি যেধরনের শিক্ষা দিতে পারেন তা দেয়া হলঃ

১. আপনার কন্যা সন্তানকে সবসময় অবাধে তার মনের ভাব প্রকাশ করতে উদ্বুদ্ধ করুন। কেউ যদি তার সাথে খারাপ ব্যবহার করে তাহলে সে যেন তার প্রতিবাদ করতে সংকোচবোধ না করে।

২. প্রত্যেকটি ভাল কাজের জন্যে তাদের প্রশংসা করুন।

৩. তাদের প্রশংসা করতে গিয়ে বাস্তবতার সাথে মিল রাখবেন। কোন কিছুই মাত্রাতিরিক্ত ভাল না। তার প্রশংসা করবেন কিন্তু তার পাশাপাশি তাদেরকে উদ্বুদ্ধ করবেন সে যা করছে তার চেয়েও ভাল কিছু যেন ভবিষ্যতে করে দেখায়।

৪. তাকে বুঝাতে হবে কেউ যদি তার বন্ধু হতে না চায় তাহলে তার মানে এই না যে তার মধ্যে কোন সমস্যা আছে। বোঝাতে হবে যে একজন মানুষকে সবাই পছন্দ নাও করতে পারে। তার মানে এই না যে সে মানুষটি খারাপ। তার মধ্যে এই আত্মবিশ্বাস গড়ে তুলতে হবে।

৫. তাকে তার নিজের কাজগুলি নিজেকেই করতে দিন। কোন কাজ করতে গিয়ে সে যদি ভয় পায় এবং আপনার সাহায্য চায় তাহলে সঙ্গে সঙ্গে সাহায্যের জন্যে এগিয়ে যাবেন না। আগে তাকে চেষ্টা করতে দিন।

৬. তাকে যেকোনো ধরনের খেলাধুলায় অংশ নিতে উদ্বুদ্ধ করুন। ফুটবল, ক্রিকেট , জিম্ন্যাস্টিকস ইত্যাদি সে যা চায় তাকে তা করতে দিন এবং উপলব্ধি করতে দিন যে সে কোন জিনিসটিতে বেশি ভাল।

৭. সে মেয়ে বলেই যে সে দুর্বল হবে এটা কখনই চিন্তা করবেন না। তার দক্ষতা বা ক্ষমতাকে কখনই প্রশ্ন করবেন না। সে যা চায় তা তাকে করতে দিন।

৮. তাকে সবসময় তার নিজের ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসী হিসেবে গড়ে তুলুন। অনেক মেয়েরাই চায় সে দেখতে যেন তার পছন্দের মডেল বা নায়িকার মত দেখতে লাগে। তাদেরকে আপনার বোঝাতে হবে যে, যা আমরা টেলিভিশনে দেখি তা বাস্তব নয়। বুঝতে সাহায্য করুণ যে সৌন্দর্য্য কখনোই চেহারা কেমন বা গায়ের রঙ দিয়ে যাচাই করা উচিৎ না। মডেল ও নায়িকারা পেশাগত কারণে জাকজমকপূর্ণভাবে পর্দায় আসলেও বাস্তবে তারাও সাধারণ মানুষ।

৯. আপনার কন্যা সন্তানকে আগে থেকেই সেক্সিজম সম্পর্কে ধারনা দিন। আমাদের সমাজে যেহেতু সেক্সিজমের মাত্রা অতিরিক্ত তাই ছোট থেকে আপনার কন্যাকে ধরণ দিন যে এমন অনেক পরিস্থিতিতে সে পড়তে পারে যখন তাকে অত্যন্ত শক্ত থাকতে হবে। এখনও মনে করা হয় ছেলেরা যা পারে মেয়েরা তা পারে না। আপনার মেয়েও যখন বড় হবে সে তার চারপাশের পরিবেশে এ সবই দেখবে। তাই তাকে আগে থেকেই সমাজের এই দিকগুলি সম্পর্কে বলবেন যাতে তার ক্ষণিকের জন্যেও কখনো এটা মনে না হয় যে সে কারও থেকে পিছিয়ে আছে।

১০. আপনার কন্যা সন্তানকে সবসময় এমন নারীদের উদাহরণ দেবেন যারা জীবনে অনেক বড় হয়েছে। গল্পের বই আমাদের নিজেদের চরিত্র বিকশিত করার পিছনে অনেক বড় ভুমিকা পালন করে। তাই তাকে এমন গল্পের বই কিনে দিন যেখানে নারীদের চরিত্র অনেক শক্তিশালী।

 

সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যে বিষয়টি তা হচ্ছে আপনার কন্যা সন্তানের সামনে কখনই এই ধরণের কথা না বলা যে "তুমি মেয়ে তাই তুমি এটি পারবেনা"। অভিভাবক হিসেবে আপনি নিজে তো এমন কথা কখনোই বলবেন না এবং আশেপাশের মানুষও যেন না বলে সে দিকে খেয়াল রাখুন। আমরা এমন একটি পৃথিবীর স্বপ্ন দেখি যেখানে ছেলে এবং মেয়েরা সমঅধিকার নিয়ে বাচবে। সেই সমঅধিকার প্রতিষ্ঠায় অভিভাবক হিসেবে আপনার ভূমিকা অপরিসীম। এই লেখাটি কোন ছেলে শিশুর অভিভাবক যদি পড়ে থাকেন তাহলে তাদের উদ্দেশ্যে লিখছি, সমঅধিকার প্রতিষ্ঠায় আপনাদের ভূমিকাও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আপনার ছেলে সন্তানকে এমনভাবে বড় করুণ যাতে সে কখনোই তার বোনকে বা মেয়ে বন্ধুটিকে দূর্বল মনে না করে। আপনার ছেলে সন্তান যদি হাড়ি-পাতিল নিয়ে খেলতে পছন্দ করে তাহলে তাকে খেলতে দিন। কখনই বলবেন না যে "হাড়ি- পাতিল দিয়ে মেয়েরা খেলে"। কিংবা সে যদি লাজুক প্রকৃতির হয় তাহলে বলবেন না সে "তুমি কি মেয়ে! লজ্জা পাচ্ছো কেন"! মনে রাখবেন, এই ধরণের ছোট ছোট মন্তব্যের মাধ্যমেই সেক্সিজম ছড়ায়। রান্না করা ছেলে এবং মেয়ে উভয়েরই দায়িত্ব আর লজ্জা প্রতিটা স্বাভাবিক মানুষের ভেতরেই একটা মাত্রা পর্যন্ত থাকে। আসুন এখন থেকেই আমরা আর একটু বেশি যত্নবান হই। ছেলে বা মেয়ে হিসেবে না দেখে আমার সন্তানের আগে মানুষ হিসেবে দেখি। তবেই আমাদের সন্তানেরা আত্মবিশ্বাসী ও সুখী হয়ে বেড়ে উঠবে।

 

আপনার মেয়ে শিশুকে বেশি বেশি বই পড়তে দিন, যাতে ও বই পড়ার অভ্যাস পায়। নানা ধরণের বই পড়ার অভ্যাস থাকলে শিশুদের জ্ঞানের পরিধি বাড়ে।

সন্তানের সৃজনশীলতার চর্চা করান কিডসটাইমের কোর্সে।কিডসটাইমের কোর্স গুলো দেখতে ভিজিট করুন নিচের লিংকে :

 https://togumogu.app/Kids-Creative-Course

ToguMogu App