নবী মুহাম্মাদ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের ভাষায় ‘‘সকল সন্তানই ফিতরাতের উপর জন্ম নেয়’’। [বুখারীঃ ১৩৮৫] এই ফিতরাত বলতে বুঝায় স্বভাবব্জাত প্রকৃতি। বাচ্চাদের ‘দুনিয়াটা মস্ত বড়’ এর শিক্ষা দেওয়া হলে তারা এর উপরই গড়ে ওঠা স্বাভাবিক, বিপরীতে ‘জান্নাতটা মস্ত বড়’ এর শিক্ষা দেওয়া হলে তাঁরা এর উপরই গড়ে ওঠা স্বাভাবিক।
আমরা বাচ্চাদের কতো স্বপ্নপুরী বা কল্পরাজ্যের গল্প শুনাই, যেগুলো সত্য নয়, সেগুলো বাচ্চাদের জীবনকে সুন্দর করে সাজাতেও কোনো কাজে আসে না। অথচ যে রাজ্য স্বপ্নের নয়, বরং বাস্তবতা; সে রাজ্যের গল্পই শুনাই না! যে রাজ্য সম্পর্কে আমাদের মালিক আল্লাহ বলেছেন, ‘’সেখানে তোমাদের মন যা চাইবে এবং যার আদেশ করবে তাই রয়েছে।’’
আজকের বাচ্চারা উপেক্ষিত। সাহাবীদের সেই সোনালী যুগে বাচ্চাদের জন্য মাসজিদে ছিলো আলাদা কাতার, রমাদ্বানে সুযোগ ছিলো সিয়াম রাখার; সে যুগে তাদের বাবা-মারা তাদেরকে জান্নাতের সফলতা পাওয়ার জন্য জান্নাতের গল্প শুনাতেন। আর আমরা দুনিয়ার পরীক্ষায় সফলতার জন্য সন্তানদের গাঁধার মতো ঘরে আটকে রেখে বলি মাসজিদে যাওয়া লাগবে না, আজকে সিয়াম রাখা লাগবে না। মাসজিদগুলোতে কচিমুখের শিশুদের মুখ দেখা যায় না, ঘরের বুড়ো-বুড়িরা সাহরী খেতে জেগে উঠলেও খোকা-খুকিরা থাকে ঘুমিয়ে। আমরা ভুলে যাই মহান আল্লাহর সেই কথা, ‘’অতঃপর যাকে জাহান্নামের আগুন হতে দূরে রাখা হবে এবং জান্নাতে ঢুকানো হবে সেই সফল হলো’’। [সূরা আলে ইমরানঃ ১৮৫]
আমরা চাই সকলের কাঁদামাটির মতো বাচ্চাগুলোর মনে জান্নাতের প্রতি ভালোবাসা যেন গেথে যায়, আমরা চাই তাঁরা যেন জান্নাতের প্রতি লোভাতুর হয়ে যায়; সেজন্যই তাদেরকে বলি ‘এসো জান্নাতের গল্প শুনি’। তাঁদের জন্যই এই বইটি।