সাধারন বিষয় গুলোঃ
- মাথার ত্বক অত্যন্ত নরম থাকে।
- মাথার উপরে ঠিক মাঝখানের অংশ সামান্য ওঠানামা করে। এতে ভয় পাবার কোন কারন নেই কারণ এই অংশটি অত্যন্ত নরম থাকার কারণে এমন হয়।
উচ্চতাঃ ৪৯.২-৪৯.৮সে.মি
ওজনঃ ৩.০-৩.৩ কেজি
মাথার আকৃতিঃ ৩৩.৯-৩৪.৫ সে.মি
মূল পরিবর্তনঃ
এই সময়ে বাচ্চাকে উপুড় করে বা উল্টিয়ে শুইয়ে দিলে সে মাথা সোজা করে নাড়াতে পারে। শব্দ শুনে সে রেসপন্স করে। এছাড়া সে মুখের দিকে তাকিয়ে থাকতে পারে।
দৈহিক পরিবর্তনঃ
তিন সপ্তাহ বয়সী শিশু কোন একটি অবজেক্টকে নিবিড় ভাবে দেখতে শিখে। সে মুখে হালকা সাউন্ড করতে পারে। এ সময় সে সবকিছু সাদাকালো দেখতে পায়। এছাড়াও শিশু এখন দ্বিধাহীন ভাবে তার হাত-পা নড়াচড়া করতে থাকে।
চিন্তার বিষয়ঃ
যদি এখনো আপনার বাচ্চার ওজন কমতে থাকে এবং সে অস্বাভাবিক রঙের যেমন সবুজ বা লাল রংয়ের পটি করে থাকে তাহলে সেটি একটি চিন্তার বিষয়।
বুদ্ধিবৃত্তিক পরিবর্তনঃ
এই সময় আপনার বাচ্চা যখন আপনার মুখের দিকে তাকিয়ে থাকে তখন সে আপনার ঠোঁট নাড়িয়ে কথা বলা অর্থাৎ ঠোঁট এর মুভমেন্ট কপি করতে থাকে। গর্ভে থাকা অবস্থায় যদি আপনি নির্দিষ্ট কোন মিউজিক বা গান শুনে থাকেন তাহলে সেটিও সে চিনতে পারে।
চিন্তার বিষয়ঃ
আপনার কথা বলার সময় বাবু যদি কোন রেসপন্স না করে কিংবা মুখে কোন শব্দ করার চেষ্টা না করে তাহলে সেটি একটি চিন্তার বিষয়।
মানসিক এবং আচরণগত পরিবর্তনঃ
এই সময়টাতে নবজাতক গত দুই সপ্তাহ থেকে বেশি পরিমাণে কান্নাকাটি করে। আবার এই সময়টাতেই সে আপনাকে আগের থেকে আরো বেশি চিনতে শুরু করে। কান্নাকাটি সময় বাবু তার মায়ের স্পর্শ পেলে কিংবা মায়ের কোলে উঠে কান্না থামিয়ে দেয়। কারন সে বেশি বেশি সময় তার মায়ের কাছেই থাকতে চায়। এছাড়াও সে মায়ের বুকের দুধ খেয়েও শান্ত হয়ে যায় কারণ বুকের দুধ খাওয়ার মাধ্যমে সে তার মায়ের স্পর্শ অনেক কাছ থেকে অনুভব করে।
চিন্তার বিষয়ঃ
বাবুর কান্না যদি অনেক বেশি সময় ধরে চলতে থাকে এবং তা অস্বাভাবিক হয় তাহলে সেটি একটি চিন্তার বিষয়।
স্বাভাবিক ঘুমের ধরনঃ
নবজাতক এখন আর আগের মতো একনাগাড়ে ঘুমিয়ে থাকতে চায় না। একবার অনেকক্ষণ ঘুমিয়ে ওঠার পরে আবার বেশ কিছুটা সময় সে জেগে থাকতে পছন্দ করে। এই সময়টাই তাকে ধীরে ধীরে দিন এবং রাতের পার্থক্য শেখানো যায়। রাতে নির্দিষ্ট সময়ে ঘুমানোর সাইকেল এই সময়টাতেই ডেভলপ করা যায়। অনেক বাচ্চাই সারারাত না ঘুমিয়ে কাটিয়ে দেয়। কিন্তু প্রতিদিন একটি নির্দিষ্ট সময়ে ঘরে বাতি কমিয়ে দিয়ে এবং একটি ঘুমের পরিবেশ সৃষ্টি করে ধীরে ধীরে বাচ্চাকে রাতে ঘুমানোর অভ্যাস করানো সম্ভব।
চিন্তার বিষয়ঃ
দিনের পুরোটা সময় কিংবা সারারাত একনাগাড়ে না ঘুমিয়ে কিংবা একনাগাড়ে কান্নাকাটি করে বাবু জেগে থাকলে সেটি আপনার জন্য চিন্তার বিষয়। কারণ এই সময়টায় বাবুর পেটে প্রচন্ড গ্যাস তৈরি হয় যার ফলে তার পেটে ব্যথা করে। এই ব্যথার কারণে অনেক সময় সে ঘুমাতে পারে না। আবার কলিক বেবিরাও সারারাত না ঘুমিয়ে কান্নাকাটি করে।
খাবার এবং পুষ্টিঃ
এখনো আপনার বাচ্চার খাবার শুধুমাত্র আপনার বুকের দুধ। বুকের দুধ থেকে তার যাবতীয় পুষ্টি পেয়ে থাকে। সে কারণে একজন মাকে সবসময় বেশি বেশি পুষ্টিকর খাবার খেতে হবে। যেন বুকের দুধের মাধ্যমে বাবু তার প্রয়োজনীয় পুষ্টি পায়।
এছাড়া ক্যালসিয়াম এবং ফসফরাসের জন্য ভিটামিন ডি এর প্রয়োজন হয়। তাই নিয়ম করে বাচ্চাকে রোদে দিতে হবে। কিন্তু সে ক্ষেত্রে খেয়াল রাখতে হবে রোদ যেন কড়া না হয়। সকাল ছয়টা থেকে আটটার মধ্যে এবং বিকাল ৫ টার পরে যে রোদটা পাওয়া যায় সেটি সবচেয়ে উপযুক্ত।
ক্যালরি এবং ফুড চার্টঃ
আপনার সোনামনির ক্যালরি চাহিদা এখনো প্রতিদিন ৩৬৮.৭ কিলোক্যালরি। বুকের দুধের মাধ্যমে বাবু এই ক্যালরি চাহিদা মিটিয়ে থাকে।এই জন্য প্রতিদিন তাকে অন্তত ৫৭০ থেকে ৯০০ মিলি বুকের দুধ খাওয়াতে হবে।
কোন অবস্থাতেই গরুর দুধ খাওয়ানো যাবে না। এছাড়া পানি খাওয়ানোরও কোন প্রয়োজন নেই।
যেসব বিষয়ে সাবধান থাকতে হবেঃ
বাচ্চাকে কখনোই একা রাখা যাবেনা কিংবা বাসায় থাকা অন্য কোন বাচ্চার সাথে একা রেখে চলে যাওয়া যাবে না। আপনার সোনা মনিকে যখন উপুর করে শুইয়ে দিবেন তখন অবশ্যই তার দিকে খেয়াল রাখবেন যেন কোনভাবেই সে অসস্তিতে না থাকে। কোন অবস্থাতেই বাচ্চাকে ঝাকানো যাবে না। বাবু যদি ঘুমিয়ে থাকে তাহলে কিছুক্ষণ পরপর এসে তাকে দেখে যেতে হবে।
অভিভাবকদের জন্য টিপসঃ
এই সময়ে বাবুর সাথে আপনার যোগাযোগ আরো বেশি বাড়িয়ে দিন। বাবুর চোখের সাথে চোখ মিলিয়ে কথা বলুন তাহলে সে আরো স্পেসিফিকভাবে সবকিছু চিনতে শিখবে। বাবু যদি বেশি কান্নাকাটি করে তাহলে পায়ের উপরে তাকে উপুর করে ধরে পিঠের উপরে হাল্কা ভাবে ম্যাসাজ করে দিন। এতে যদি তার গ্যাসের সমস্যা হয় তাহলে তা কমে যাবে। বাবুকে উল্টা করে শুইয়ে রাখার সময় তার সাথে এমনভাবে কথা বলুন যেন সে আপনার দিকে তাকিয়ে থেকে কথা বলতে চায় । এতে করে তার ঘাড় শক্ত হতে সাহায্য করবে।
বাচ্চার মায়ের জন্য এই সময়টা অনেক বেশি স্ট্রেসফুল। তাই যখনই সময় পাবেন একটু বিশ্রাম নিয়ে নিবেন। যদি বাচ্চা একদমই না ঘুমায় তাহলে কাউকে তার দায়িত্ব দিয়ে আপনি কিছুক্ষন বিশ্রাম নিয়ে আসবেন। এতে পরবর্তীতে আপনি বাচ্চার প্রতি আরো বেশি যত্নশীল হতে পারবেন।