ToguMogu থেকে আমরা Expected Parents দের জন্যে প্রকাশ করছি Pregnancy Series. আজকের লেখায় আমরা এখানে তুলে ধরছি Pregnancy এর তৃতীয় সপ্তাহ।
আপনার ভিতরে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি সংযোজন ঘটেছে- আপনার স্বামীর একটি একক শুক্রাণু আপনার ডিম্বাণুর বাইরের শক্ত আবরণ ভেদ করে ভিতরে প্রবেশ করেছে এবং আপনার ডিম্বাণুকে করেছে উর্বর। এর কিছুদিনের মধ্যেই উর্বর ডিম্বানুটি প্রবেশ করেছে আপনার জরায়ূতে এবং শুরু হয়ে গেছে শিশুর শারিরীক গঠন তৈরির ম্যাজিকাল প্রক্রিয়া।
আপনার ছোট্ট শিশুটি এখন শত শত কোষের সমষ্টিগত একটি ছোট্ট বল, যেটাকে ব্লাস্টোসিস্ট (blastocyst) বলা হয়। কোষগুলোর অতি দ্রুত বিভাজনের ফলে এটি তৈরী হয়েছে। এদের কিছু অংশ প্লাসেন্টার ভিতরে বৃদ্ধি পেয়ে hCG (Human chorionic gonadotropin) নামক হরমোন তৈরী করছে। এই হরমোন আপনার গর্ভাশয় থেকে নতুন ডিম্বাণু নির্গমন রোধ করে এবং ত্বরান্বিত করে ইস্ট্রোজেন ও প্রোজেস্টেরন হরমোন উৎপাদন। এই ইস্ট্রোজেন ও প্রোজেস্টেরন হরমোন আপনার জরায়ূর আস্তরণের সুরক্ষা করে এবং রক্ষা করে এর ক্ষুদ্র যাত্রী -আপনার অনাগত সন্তানকে। এই হরমোনই শিশুটির জন্মের আগ পর্যন্ত প্লাসেন্টার বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখে। প্লাসেন্টা ধীরে ধীরে বেড়ে উঠা গর্ভের সন্তানকে অক্সিজেন এবং প্রয়োজনীয় পুষ্টিকর উপাদান সরবরাহ করে এবং শিশুর রক্ত থেকে বর্জ্য পদার্থ পরিষ্কার করতে সাহায্য করে। শিশু জন্মের সময় এটি সহ বেরিয়ে আসে। আঞ্চলিক ভাষায় এটিকে গর্ভফুল বলা হয়।
এদিকে ব্লাস্টোসিস্ট বা ক্ষুদ্র বলটির চারদিকের গহ্বরে এ্যামনিয়টিক (amniotic) ফ্লুয়িড সংগৃহিত হয়ে এ্যামনিয়টিক থলেতে পরিণত হয়। এই ফ্লুয়িডের মধ্যেই আপনার সন্তান বেড়ে উঠবে। ঠিক এই সময় থেকেই ওই ক্ষুদ্র ব্লাস্টোসিস্ট, যেটাকে আমরা ক্ষুদ্র বল নামে অভিহিত করেছিলাম সেটি অক্সিজেন ও পুষ্টি গ্রহণ এবং বর্জ নিষ্কাশনের কাজ করে থাকে। পরের সপ্তাহ শেষে এই কাজগুলি সম্পন্ন করার জন্য প্লাসেন্টা পুরোপুরি তৈরি হয়ে যাবে।
কিভাবে আপনার জীবনের পরিবর্তন আসেঃ
এসপ্তাহের মধ্যেই আপনি ঘরোয়া Pregnancy Test এ পসিটিভ রেজাল্ট পায়ে যাবেন। ঘরোয়া পরীক্ষার জন্যে Pregnancy Test কিট আপনার নিকটবর্তী ফার্মেসীতে পাওয়া যায় যেগুলোর ব্যবহার বিধি পণ্যটির গায়ে লেখা আছে। ফল যদি নেগেটিভ বা অসফলও আসে তবে আপনার হতাশ হওয়ার কোন কারণ নাই। এমনও হতে পারে আপনি কিছুটা আগেই পরীক্ষা করেছেন। পরীক্ষার নিশ্চিত ফল পাওয়ার জন্যে আপনার ঋতুচক্র বন্ধ হওয়ার পরে কয়েকদিন বা সপ্তাহ পর্যন্ত অপেক্ষা করুন। এরপরেও যদি আপনার ঋতুচক্র ফিরে না আসে তবে আবার পরীক্ষা করুন। যদি আরো এক সপ্তাহ বা কয়েকদিন পরেও আপনার ঋতুচক্র ফিরে না আসে এবং পজিটিভ ফল না পাওয়া যায় তবে আপনার চিকিৎসকের সাথে দেখা করে পরামর্শ নিন। সাধারণত এই সময়ের মধ্যেই পজিটিভ ফলজেনে নিন Pregnancy এর প্রাথমিক লক্ষণ গুলো।
অনেকেই কিছু কিছু লক্ষণের মাধ্যমে পরীক্ষার ফল পজিটিভ আসার আগেই বুঝতে পারেন যে তিনি Pregnant. Pregnancy এর প্রাথমিক লক্ষণ গুলো নিচে দেয়া হলো:
১) স্তন কোমল, নমনীয় এবং স্ফীত হয়ে যাওয়া : অনেক নারীই স্তনের অতিরিক্ত স্ফীতি অনুভব করেন।
২) ক্লান্তি বা অবসাদ: হঠাৎ করেই ক্লান্ত হয়ে পড়েছেন? প্রজেস্টেরন হরমোনের লেভেল বেড়ে যাওয়া এবং শিশুর বৃদ্ধি সহায়ক কার্যপ্রণালীর কারণে আপনি এতটাই ক্লান্তি বোধ করতে পারেন যে মনে হতে পারে ম্যারাথন দৌড় শেষ করেছেন।
৩) ঘন ঘন প্রস্রাবের বেগ : Pregnancy এর অল্প সময়ের মধ্যেই আপনার ঘন ঘন প্রস্রাবের বেগ হতে পারে।
৪) গন্ধের প্রতি সংবেদনশীলতা : অনেক নতুন Pregnant মা আশেপাশের গন্ধের প্রতি অতি সংবেদনশীল হয়ে যায়। কেউ কেউ তার কাছের মানুষটির শরীরের গন্ধও সহ্য করতে পারেন না। এটি ইস্ট্রোজেন হরমোন বেড়ে যাওয়ার পার্শপ্রতিক্রিয়া।
৫)খাদ্যে অরুচি : আপনি হঠাত করে লক্ষ্য করতে পারেন আপনার অতি প্রিয় খাবার গুলোতেও হঠাৎ অরুচি চলে এসেছে।
৬) বমি বমি ভাব : অনেক নারীই এই সময় বমি বমি অর্থাৎ Nausea কিংবা হঠাৎ করে বমির চাপ অনুভব করেন। সাধারণত এই বমি বমি ভাবটি সকালের দিকে বেশি হয় তাই একে মর্নিং সিকনেস বলা হয়।
৭) শরীরের উচ্চ তাপমাত্রা : অনেক সময়ই শরীরের তাপমাত্রা বেশি থাকতে দেখা যায়। ১৮ দিন পর্যন্ত আপনার শরীরের তাপমাত্রা যদি স্বাভাবিক এর চেয়ে বেশি থাকে তবে ধরে নিতে হবে আপনি গর্ভধারণ করেছেন।
পরবর্তী সপ্তাহে আপনি মাসিক না হলে নিকটস্থ ফার্মেসি থেকে Pregnancy Test Kit কিনে এনে নিজেই পরীক্ষা করতে পারেন। সাধারণত যে সময় আপনার মাসিক হওয়ার কথা ছিল সে সময়ের কয়েকদিন বা এক সপ্তাহ পরে এই পরীক্ষা করে আপনি নিশ্চিত হতে পারেন।