সাধারন বিষয় গুলোঃ
✅এখন আপনার বাবু আগের থেকে অনেক বেশি সক্রিয় হয়ে উঠে। তার ঘুমের পরিমাণ কমে যায়। এমন কি সে ২৪ ঘন্টার মধ্যে সারাদিনে ১০ ঘন্টাও জেগে থাকতে পারে।
✅এই সপ্তাহে বাচ্চার সাধারণ চেকআপের জন্য ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাওয়া ভালো।
?উচ্চতাঃ ৫৩.৮-৫৪.৮ সে.মি
?ওজনঃ ৪.৩-৪.৪ কেজি
?মাথার আকৃতিঃ ৩৬.৭-৩৭.৩ সে.মি
মূল পরিবর্তনঃ
এই সপ্তাহেও শিশু আগের সপ্তাহের মতোই আচরণ করে। অর্থাৎ হাত-পা নেড়ে খেলা করা, তাকে ডাক দিলে ঘুরে তাকানো এবং অন্যান্য শব্দে রেসপন্স করা এই কাজগুলো করে থাকে।
দৈহিক পরিবর্তনঃ
বাবু আগের সপ্তাহ থেকে কয়েক সেন্টিমিটার (সাধারণত ২৫সে.মি) লম্বা হয় এবং ওজনও বৃদ্ধি পায়। এই সময়ে তাকে কোন জুতা পরানো উচিত না। কারন তার পায়ের আকারও বৃদ্ধি পায়। শীতের সময় অথবা প্রয়োজন হলে তাকে সুতি কাপড়ের মোজা পরিয়ে রাখুন।
? চিন্তার বিষয়ঃ
? ওজন বৃদ্ধি না পেয়ে যদি কমতে থাকে তাহলে তা আপনার জন্য চিন্তার বিষয়।
বুদ্ধিবৃত্তিক পরিবর্তনঃ
আপনার বাবু এখন অনেক কিছুই বুঝতে শেখে। তার ডায়াপার পরিবর্তনের সময় কিংবা তার শরীর মাসাজ করার সময় তার সাথে গান গেয়ে বা কথা বললে সে অনেক খুশি হয়। আপনি যদি কোনো কারণে বিমর্ষ থাকেন কিংবা ওর সামনে দুঃখ প্রকাশ করেন তাহলে সে নিজেও মন খারাপ করে।
আপনার শিশুটি এখন হাসতে পারে। তাই তার সাথে বেশি বেশি কথা বলুন যেন সে বেশি করে হাসতে পারে। এতে যেমন বাবুর মানসিক বিকাশ ঘটে তেমনি আপনি নিজেও অনেক প্রশান্তিতে থাকবেন।
মানসিক এবং আচরণগত পরিবর্তনঃ
আপনার ছোট্ট সোনামনি এখন নানা রকম আচরণ করে। সে মুখে বিভিন্ন ধরনের শব্দ করতে পারে। বিভিন্ন ধরনের আওয়াজ শুনে সে খুশি হয়ে হাত-পা ছুঁড়ে খেলে , চেঁচিয়ে ওঠে কিংবা ভালো লাগলে বার বার শুনতে চায়।
? চিন্তার বিষয়ঃ
? বাবু যদি আপনার খেলার সাথে রেসপন্স না করে অর্থাৎ কোনরকম হাত-পা ছোড়াছুড়ি কিংবা মুখের শব্দ বা মুখ নাড়ানোর চেষ্টা না করে তাহলে এটি চিন্তার বিষয় হতে পারে।
স্বাভাবিক ঘুমের ধরনঃ
এই বয়সে বাবুর ঘুম আগের থেকে একটু কমে আসে। সে সারাদিনে সাত থেকে আট ঘণ্টা এমনকি দশ ঘণ্টা পর্যন্ত জেগে থাকতে পারে। আপনি একটু খেয়াল করলেই দেখবেন তার ঘুমের একটি নির্দিষ্ট সময় রয়েছে। নির্দিষ্ট সময় পরপর সে ঘুম থেকে জাগে এবং একটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত সে জেগে থেকে আবার ঘুমিয়ে যায়। এই সময় থেকেই বাবুকে একটি সঠিক রুটিনে ঘুমানোর অভ্যাস করানো যেতে পারে।
খাবার এবং পুষ্টিঃ
এখনো বাবুর একমাত্র খাবার তার মায়ের বুকের দুধ। তবে তার খাবারের চাহিদা দিন দিন বাড়তে থাকে। তাই তাকে আগের থেকে আরো বেশি সময় ধরে কিংবা বারবার খেতে দিতে হবে।
খাওয়ার পরে অবশ্যই তাকে সোজা করে বুকে নিয়ে হাল্কা করে পিঠে ম্যাসাজ করে ঢেকুর তুলে দিতে হবে।
ক্যালরি এবং ফুড চার্টঃ
এই বয়সে বাচ্চার প্রতিদিন ক্যালরি চাহিদা হলো ৪৬৬.৬ কিলোক্যালরি।
যেসব বিষয়ে সাবধান থাকতে হবেঃ
যেহেতু এখন আপনার বাবু হাত পা নাড়াতে শিখে তাই তার আশেপাশে কোন খেলনা বা সফট টয় রাখা যাবে না। এমনকি ঘুমাতে গেলে তার গায়ের উপরে কোন কাঁথা বা কম্বল দেওয়া ঠিক হবে না। কেননা ঘুমের মধ্যে হাত-পা নাড়ানোর ফলে এগুলি মুখের উপরে চলে আসতে পারে। এতে আপনার বাচ্চার নিঃশ্বাস আটকে যেতে পারে। এসব বিষয় অবশ্যই আপনাকে সাবধান থাকতে হবে। সাথে বাবুকে কখনোই একা ঘরে রাখবেন না।
এছাড়াও এই সময় বাবুর মাথায় খুশকির মত দানাদার জিনিস দেখা যেতে পারে।্তাই বলে তাকে প্রতিদিন শ্যাম্পু করিয়ে দিবেন না। প্রতিদিন মাথায় শ্যাম্পু দিলে বাবুর স্কাল রুক্ষ হয়ে যায়। এগুলো খুবই স্বাভাবিক তাই এটা নিয়ে চিন্তার কোন কারণ নেই।
অভিভাবকদের জন্য টিপসঃ
আপনার বাচ্চার এখন কোন খেলনা থেকেও বেশি প্রয়োজন তার মা এবং বাবাকে। মা তার বাচ্চার সাথে সারাদিন এমনিই অনেক সময় পার করেন। এই সময় বাবাকেও অনেক বেশি দায়িত্বশীল আচরণ করতে হবে। বাইরে থেকে এসে হাতমুখ ধুয়ে বাবুর সাথে যথেষ্ট সময় পার করুন। এতে করে আপনার ছোট্ট সোনামণিটি যেমন খুশি হবে তেমনি আপনিও অনেক রিফ্রেশ হয়ে যাবেন। মনে রাখবেন বাচ্চার তার ব্যবহৃত জিনিসপত্র যেমন প্রয়োজনীয় তার থেকে বেশি প্রয়োজন বাবা-মায়ের সাথে তার যথেষ্ট সময় কাটানো।