সাধারন বিষয় গুলোঃ
- ঘাড়ের পেশী শক্তিশালী হওয়া শুরু করে।
- মুখে আআআহহ/উউউহহহ শব্দ করতে শিখে।
- সবকিছু সাদাকালো দেখে।
- শব্দে সাড়া দেয় এবং মুখের দিকে তাকিয়ে থাকে।
উচ্চতাঃ ৪৯.২-৪৯.৮ সে.মি
ওজনঃ ৩.৩-৩.৩ কেজি
মাথার আকৃতিঃ ৩৩.৯-৩৪.৫ সে.মি
মূল পরিবর্তন ঃ
আপনি নিশ্চয়ই খেয়াল করবেন জন্মের সময় থেকে আপনার বাবু এই সময়ের মধ্যে একটু একটু করে বেশ বড় হয়ে গিয়েছে। এখন সে আপনার কন্ঠ ও ঘ্রাণ চিনতে শিখে। সে আপনাকে সহজেই অন্য মানুষ থেকে আলাদা করতে পারে। এমনকি তাকে ডাক দিলে বা তার মুখের দিকে তাকিয়ে কথা বললে সে মুখ নাড়িয়ে সাড়া দেয়।
দৈহিক পরিবর্তনঃ
চার সপ্তাহ বা এক মাস বয়সের শিশু অনেকটাই ঝরঝরে হয়ে যায়। এসময় সে একাই হাত-পা নেড়ে খেলা করে। তাছাড়া উপুড় করে শুইয়ে দিলে সে মাথা সোজা করে ধরে রাখতে পারে। এই বয়সে এসে সে দুধ খাওয়ার নিয়ম পুরোপুরি রপ্ত করে ফেলে। এমনকি দুধ খাওয়ার সময় সে হাত দিয়ে স্তন ধরে রাখতে পারে।
চিন্তার বিষয়ঃ
বাবু যদি স্বাভাবিকভাবে হাত পা নাড়াচাড়া না করে কিংবা আই কন্টাক্ট না করে অথবা ডাক দিলে সাড়া না দেয় তাহলে তা আপনার জন্য চিন্তার বিষয়।
বুদ্ধিবৃত্তিক পরিবর্তনঃ
এ সময় আপনার ছোট্ট সোনামণি আপনাকে সব সময় অবজার্ভ করতে থাকে। আপনি যখনই তার আশপাশ দিয়ে চলাফেরা করেন তখন সে আপনার দিকে তাকিয়ে থাকে এবং আপনাকে খেয়াল করে। এছাড়াও আপনি তার সাথে কথা বললে সে নিজেও কথা বলার চেষ্টা করে। তার ক্ষুধা পেলে সে কান্না শুরু করে আর তার নিজের হাত মুখে দিয়ে চুষতে থাকে।
মানসিক এবং আচরণগত পরিবর্তনঃ
আপনার বাবু এখন হাসতে পারে। তাকে কোন উজ্জ্বল রঙের খেলনা এমনকি মোবাইলের বা অন্য কোন ডিভাইসের আলো দেখালে সে রেসপন্স করে। এই সময় তার দৃষ্টি মোটামুটি স্থির হয় । এমনকি সে সাদাকালো বা গাড় রংয়ের কোন বস্তুর দিকে তার দৃষ্টি আটকাতে পারে।
চিন্তার বিষয়ঃ
হঠাৎ কোন শব্দে অথবা জোরে শব্দ শুনে যদি আপনার বাবু যদি কেঁপে না উঠে কিংবা না তাকায় তাহলে সেটি একটি চিন্তার বিষয়।সয়
স্বাভাবিক ঘুমের ধরনঃ
এখনো আপনার ছোট্ট সোনামনি প্রায় সারাদিন ঘুমিয়েই পার করে। তবে তাদের ঘুমের ধরনটা একটানা হওয়ার চাইতে বরং কিছু সময় পর পর হতে পারে। যেমন সে টানা তিন-চার ঘন্টা ঘুমিয়ে এরপর হয়তো আধাঘন্টা কিংবা এক ঘন্টা জেগে থাকে। সাধারণত দিনে কিছু সময় পর পর জাগলেও রাতে বেশ লম্বা সময় যাবত শিশু ঘুমে থাকে। তবে এর ব্যতিক্রম হতে পারে। এমনও হয় কোন কোন শিশু রাতের একটি নির্দিষ্ট সময় যাবত কিংবা সারারাত নির্ঘুম কাটিয়ে দেয়।
চিন্তার বিষয়ঃ
একটানা সারাদিন ঘুমিয়ে পার করা অথবা সারারাত মোটেও না ঘুমানো আর কান্নাকাটি করা শিশুর জন্য ভালো না।
খাবার এবং পুষ্টিঃ
এই সপ্তাহে শিশু শুধুমাত্র মায়ের বুকের দুধ খেয়ে থাকে। মায়ের বুকের দুধ ব্যতীত অন্য কোন খাবার বা পানি শিশুকে দেওয়া হয় না। তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে ডাক্তার যদি সাজেশন দেন তাহলে শিশুকে বাহিরের দুধ বা ফর্মুলা মিল্ক খাওয়ানো যেতে পারে।
খাওয়ার পরে ঢেকুর তোলানো আপনার বাবুর জন্য খুবই প্রয়োজন। ছয় মাস বয়স পর্যন্ত আপনাকে নিয়ম করে এই কাজটি করতে হবে।
ক্যালরি এবং ফুড চার্টঃ
এই বয়সেও বাচ্চা দৈনিক ক্যালরি চাহিদা থাকে ৩৬৮.৭ কিলোক্যালরি। শিশুর দৈনিক মায়ের বুকের দুধের চাহিদা হলো ৫৭০-৯০০ মি.লি। আর যদি ফর্মুলা মিল্ক খেয়ে থাকে তাহলে তার চাহিদা দৈনিক ৭৮০মি.লি।
যেসব বিষয়ে সাবধান থাকতে হবেঃ
আপনার ছোট্ট সোনামণি এখন একটু বড়। তাকে গোসল করানোর সময় সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। এছাড়া সে যদি একটানা অনেকক্ষণ কান্নাকাটি করে তাহলে তাকে যত দ্রুত সম্ভব কান্না থামানোর চেষ্টা করুন। কেননা অধিক সময় ধরে কান্না করা তার মেন্টাল ডেভেলপমেন্ট এর জন্য ভালো নয়।
অভিভাবকদের জন্য টিপসঃ
আপনার শিশুর সাথে অধিক পরিমাণে কথা বলা বাড়িয়ে দিন। কেননা সে এখন আপনার কণ্ঠ শুনতে পারে। তাকে উজ্জ্বল রংয়ের খেলনা কিংবা কোনো অবজেক্ট দেখান যেটা তার দৃষ্টিশক্তি স্থির করতে সাহায্য করবে। এছাড়া তাকে দিনে কয়েক বার উল্টে পাল্টে দিন এবং হাত-পা নাড়িয়ে ব্যায়াম করিয়ে দিন। এতে তার পেটে গ্যাস জমে থাকার সমস্যা থেকে মুক্তি মিলবে।