সাধারন বিষয় গুলোঃ
✅ ৮ সপ্তাহের বেবির জন্মের সময়ের চাইতে ৯০০ গ্রাম থেকে ১.৩ কেজি পর্যন্ত বৃদ্ধি পায়। এই সময় তার খাবারের চাহিদা বেড়ে যায়। তাই সে আগের চাইতেও বেশি ঘন ঘন এবং অধিক সময় নিয়ে খেতে চায়। এ সময় বাবুকে পেট ভরে খাওয়ানো, সঠিক ভাবে ঘুমানো এবং সময়মতো ডায়াপার পরিবর্তন করা নিশ্চিত করতে পারলেই আপনার বাবু অনেকটাই প্রাণবন্ত এবং হাসিখুশি থাকে।
? উচ্চতাঃ ৫৩.৮-৫৪.৮ সে.মি
? ওজনঃ ৪.৩-৪.৪কেজি
? মাথার আকৃতিঃ ৩৬.৬-৩৭.৩ সে.মি
মূল পরিবর্তনঃ
এখন আপনার শিশুর বয়স প্রায় দুই মাস।এই সময়ে আপনি তার মধ্যে আগে থেকে আরও বেশি পরিবর্তন লক্ষ করবেন। তার শরীরে ঝাকি দেওয়ার প্রবণতা কমে যায় এবং তার হাত-পায়ে নড়াচড়াও অনেক গোছানো হয়। সে তার অনেকগুলো খেলনার মধ্যে থেকে কিছু খেলনা পছন্দ করে এবং পছন্দের খেলনা বা মানুষকে দেখলে সে খুশি হয় ও হাসি দেয়।
দৈহিক পরিবর্তনঃ
৮ সপ্তাহ বয়সে শিশুর তার শরীরের ওপর অনেকটাই নিয়ন্ত্রণ চলে আসে। আপনি খেয়াল করবেন এ সময় তাকে উপুড় করে শুইয়ে দিলে কিংবা সোজাভাবে অর্থাৎ খাঁড়া করে কোলে নিলে সে মাথা মোটামুটি শক্তভাবে সোজা করে রাখতে পারে। তার হাত পায়ের সঞ্চালন আগের থেকে অনেক বেশী নিয়ন্ত্রিত এবং সে এই বয়সে পা দিয়ে ঠেলা দিয়ে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে চেষ্টা করে।
এছাড়াও এখন আপনার বাবুর মুখ থেকে লালা পড়া শুরু হয়। সে তার আংগুল বা হাত মুখে দিয়ে চুষতে পছন্দ করে।
? চিন্তার বিষয়ঃ
? এই বয়সে এসেও যদি আপনার বাবু মাথা সোজা করতে না পারে তাহলে তা আপনার জন্যে একটি চিন্তার বিষয়।
বুদ্ধিবৃত্তিক পরিবর্তনঃ
এখন আপনার শিশুর দৃষ্টিশক্তির যথেষ্ট উন্নতি হয়। সে তার চোখের সামনে থেকে প্রায় ৬০ সেমি দূরের বস্তু দেখতে পারে। এ সময় শুয়ে উজ্জ্বল রঙের প্রতি আকৃষ্ট হয় এবং বিভিন্ন সেইপ এর বস্তুও চিনতে শুরু করে।
? চিন্তার বিষয়ঃ
? আপনার বাবু যদি কোন শব্দে রেসপন্স না করে অথবা তার সামনে দিয়ে কোন কিছুর চলাচল দেখলে বা কেউ তার সাথে কথা বললে সে উত্তর না দিলে অর্থাৎ রেসপন্স না করলে তা একটি চিন্তার বিষয়।
মানসিক এবং আচরণগত পরিবর্তনঃ
আপনার বাবুর এখন প্রায় দুই মাস বয়স। এই সময়ে সে তার পরিচিত মুখগুলো কে চিনতে পারে। তার পরিচিত মানুষেরা তাকে ডাক দিলে সে তাদের দিকে ঘুরে তাকায় এবং খুশির হাসি দেয়। ঠিক একইভাবে অপরিচিত মুখগুলোকে দেখেও সে কোন রেসপন্স করে না। এখন তার খেলাধুলা প্রচুর বেড়ে যায়। সেই সাথে তার অনাবিল হাসিও বেড়ে যায়। আপনার ছোট ছোট কাজ গুলি বাবুকে অনেক বেশি আনন্দ দেয়।
স্বাভাবিক ঘুমের ধরনঃ
আপনার ৮ সপ্তাহ বয়সী সন্তান এখন আগের মত ১৮ ঘন্টা ঘুমানোর পরিবর্তে ১১-১৫ ঘন্টা ঘুমাবে। হতে পারে সেটা আরো কম সময়। মাঝে মাঝে এসে টানা ৫-৬ ঘন্টা ঘুমায় আবার একটানা অনেকক্ষণ জেগেও থাকে। এই সময় আপনি বাবুকে দোলনা কিংবা বেবি কডে ঘুম না পাড়িয়ে যদি খাটে ঘুম পাড়ানোর অভ্যাস করান তাহলে সবচেয়ে ভালো হবে। এতে তারমধ্যে নিজে নিজে ঘুমানোর অভ্যাস তৈরি হবে।
খাবার এবং পুষ্টিঃ
৮ সপ্তাহ বয়সী বাবুর ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অন্তত ৬ বার পরিপূর্ণভাবে খাওয়ানোর ব্যবস্থা করতে হবে। এইসময় বাবু গ্রোথ অনেক বেশি থাকে তাই তার খাবারের চাহিদাও বেড়ে যায়। তার খাবারের পরিমাণ বাড়িয়ে দিন বিশেষত বিকালের দিকে তাকে বেশি বেশি খেতে দিন। একে ক্লাস্টার ফিডিং বলে। এসময় বিকালের দিকে বাবুর খাবারের চাহিদা অনেক বেশি থাকে। আপনি যদি দুশ্চিন্তায় থাকেন যে আপনার বাবু সঠিক পরিমাণে বুকের দুধ পাচ্ছে কিনা সে ক্ষেত্রে খেয়াল রাখুন সে দিনে অন্তত ছয় বার তার ন্যাপি ভেজায় কিনা এবং সে হাসি খুশি এবং প্রাণবন্ত কিনা। যদি তা হয় তাহলে আপনি তার খাবারের ব্যাপারে নিশ্চিন্ত থাকুন।
আপনার বাবু যদি ফর্মুলা দুধ খেয়ে থাকে তাহলে তার দুধের পরিমাণ একটু বাড়িয়ে দিন । তবে অবশ্যই খেয়াল রাখবেন নির্দেশিকা অনুযায়ী দুধ এবং পানির পরিমাণ যেন সব সময় ঠিক থাকে।
ক্যালরি এবং ফুড চার্টঃ
এই সময় প্রতি সপ্তাহে বাবুর ১৫০-২০০ গ্রাম ওজন বৃদ্ধি পায়। তার প্রতিদিন ক্যালরি চাহিদা থাকে ৫৭৩.৪ কিলোক্যালরি।
যেসব বিষয়ে সাবধান থাকতে হবেঃ
বাবুকে কখনোই একা রাখা যাবেনা। তার গোসলের সময় সতর্ক থাকুন। কেননা এসময়ে সে অনেক বেশি নড়াচড়া করে। সে এখন পা দিয়ে ঠেলা দিয়ে তার স্থান পরিবর্তন করতে শিখে। তাই অবশ্যই খাটে শুইয়ে দিয়ে বাবুকে কখনোই একা রেখে অন্য কোথাও যাওয়া যাবেনা।
অভিভাবকদের জন্য টিপসঃ
আপনি আপনার দুই মাস বয়সী বাবুর সাথে বিভিন্ন খেলা বিশেষ করে ‘ টু.. কি’ বা পিকাবু খেলার মাধ্যমে তাকে অনেক বেশি উজ্জীবিত রাখতে পারেন। বাইরে অতিরিক্ত গরম বা ঠাণ্ডা না থাকলে বাবুকে নিয়ে খোলা বাতাসে ঘুরে আসুন। যেহেতু এ সময় তার শ্রবণশক্তি বৃদ্ধি পায় তাই ঘরের মধ্যে বিভিন্ন ধরনের মিউজিক বাজিয়ে তাকে শোনান। এছাড়া বাসায় একুরিয়াম থাকলে তাকে মাছ দেখাতে পারেন। এতে করে সে যদি মাছের মুভমেন্টের দিকে দৃষ্টি স্থির করতে পারে তাহলে তা তার চোখের জন্য ভালো।