ToguMogu
article.title
 Jun 10, 2019
 

আপনার শিশু কি অখাদ্য খায়?

খাবার নয় এমন যে কোনো কিছু খাওয়ার অভ্যাসকে ‘পিকা’ (Pica) বলা হয়। এক বছর থেকে ছয় বছর পর্যন্ত বয়সী শিশুদের মধ্যে এ প্রবণতা বেশি লক্ষ্য করা যায়। ছেলে-মেয়ে উভয় শিশুই এ রোগে আক্রান্ত হতে পারে। এক বছর থেকে দুই বছর বয়স থেকে সাধারণত এটি শুরু হয় এবং বয়স বাড়লে কমে যায়।

 

পিকার কারণ কী?                   

পিকার সঠিক কারণ জানা যায়নি। তবে বিশেষ পুষ্টি উপাদানের অভাব (আয়রন, জিংক ইত্যাদি), বাবা মায়ের অবহেলা, বুদ্ধি প্রতিবন্ধিত্ব, দারিদ্র্য ইত্যাদির সঙ্গে এর সম্পর্ক পাওয়া গেছে।

কীভাবে বুঝবেন আপনার শিশু পিকায় আক্রান্ত?

প্রথমত, যদি আপনার শিশু অন্তত এক মাস যাবত এমন কিছু নিয়মিত খেতে থাকে যা খাদ্য নয়। দ্বিতীয়ত, যদি এ ‘খাদ্য নয়’ এমন বস্তুটি খাওয়া তার বয়সোচিত বিকাশের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ না হয়। তৃতীয়ত, এ বস্তুটি খাওয়ার অভ্যাসটি যদি শিশুর পারিবারিক সংস্কৃতির অংশও না হয়। চতুর্থত, যদি এর সঙ্গে অন্য কোনো মানসিক সমস্যাও থেকে থাকে (যেমন বুদ্ধি প্রতিবন্ধিত্ব)।

কী জটিলতা সৃষ্টি হতে পারে?

এটা নির্ভর করে শিশু যে বস্তুটি খাচ্ছে তার ধরণের উপর। যদি বস্তুটি রঙ জাতীয় কিছু হয়, তাহলে সীসার বিষক্রিয়া হতে পারে। মাটি জাতীয় কিছু হলে কৃমির সংক্রমণ হতে পারে। কাদা খাওয়ার অভ্যাস থাকলে অ্যানিমিয়া (আয়রনের অভাব) ও জিংকের অভাব হতে পারে। চুল বা পাথর খেয়ে ফেললে খাদ্যনালী, অন্ত্র অবরুদ্ধ হয়ে প্রাণ পর্যন্ত বিপন্ন হতে পারে। প্রাণের আশঙ্কা থাকে ধারালো বস্তু যেমন স্ট্যাপলারের পিন, সেফটিপিন খেয়ে ফেললেও।

কী করণীয়?

সাধারণত যেসব শিশু পরিবেশ থেকে পর্যাপ্ত উদ্দীপনা পায় না, বাবা-মায়ের যথেষ্ট মনোযোগ পায় না তাদের মধ্যেই এমন প্রবণতা বেশি লক্ষ্য করা যায়। একবার এ অভ্যাস তৈরি হয়ে গেলে তা ছাড়ানোও কষ্টকর। এ রোগে আক্রান্ত শিশুর প্রধান চিকিৎসা সে যে অখাদ্য বস্তুটি খায় সেটি শিশুর নাগালের বাইরে রাখা এবং তাকে বড়দের পর্যবেক্ষণে নতুন ধরণের খেলায় ব্যস্ত রাখা। যদি ল্যাবরেটরি পরীক্ষায় আয়রন ও জিংকের অভাব ধরা পড়ে, তাহলে সেই অনুযায়ী সাপ্লিমেন্টারি ওষুধ দেওয়া। নির্দিষ্ট বিরতিতে কৃমিনাশক ওষুধ দেওয়া। এর সঙ্গে অন্য কোনো মানসিক সমস্যা থেকে থাকলে তার যথাযথ চিকিৎসার ব্যবস্থা করা।

কখন ডাক্তার দেখাবেন?

আপনি যদি লক্ষ্য করে থাকেন যে আপনার শিশু অন্তত এক মাস যাবত প্রায়শই এমন কোনো বস্তু খাচ্ছে যা ‘খাদ্য নয়’, তাহলে তার দিকে আরও মনোযোগ দিন। তাকে আরও একটু বেশি সময় দিন। পর্যাপ্ত সময় দেওয়ার পরও যদি এ অভ্যাস দূর না হয় তাহলে শিশু বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন। শিশুর আয়রন বা জিংকের অভাব কিংবা অন্য কোনো মানসিক বা বুদ্ধিগত সমস্যা আছে কিনা নিশ্চিত হয়ে নিন।

লেখক: মৌলী আখন্দ, মেডিকেল অফিসার, নবজাতক ও শিশু নিবিড় পর্যবেক্ষণ ইউনিট, ইউনিভারসাল মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল।

 

আপনার পরিবারের পুষ্টি নিশ্চিত করতে নিয়মিতভাবে শক্তি+ প্রোডাক্ট কিনুন এই লিঙ্কে:

https://www.grameendanone.net/

 

Learning Toys
Related Articles