আপনার সন্তান এখন তিন বছরের মাইলস্টোনগুলো অতিক্রম করতে চলেছে। দৌড়াদৌড়ি, লাফালাফি কিংবা অবিরত ছোটাছুটি করতে সে এখন মাস্টার হয়ে ওঠে। তার পিছে সারাদিন দৌড়াতে গিয়ে আপনাকে সব সময় পায়ের উপরে থাকা লাগবে। সে এখন আপনার সঙ্গে রুমের ভিতর নাচ করতে কিংবা বাইরে গিয়ে আপনার সাথে বল খেলতে চাইবে। আপনার সঙ্গে খেলা করা তার একটি প্রিয় কাজ হলেও সে এখন নিজে নিজে কিংবা তার বন্ধুদের সাথে খেলাধুলার মধ্য দিয়ে সময় অতিবাহিত করে। মাঝেমধ্যে হয়তো সে প্রচন্ড রেগে গিয়ে আপনার সাথে খারাপ ব্যবহার করতে পারে। এই সময় ধৈর্য ধারণ করে তার রাগ থামা পর্যন্ত তাকে সময় দিন। সে কিছুটা শান্ত হওয়ার পরে তাকে আদর করে বুঝিয়ে বলুন যে তার ব্যবহার কেমন হওয়া উচিত।
Category: ৩ থেকে ৫ বছর বয়সী শিশু
৩৭ মাস বয়সী সন্তানের জন্য যা কিছু জানা প্রয়োজন
এই বয়সের শিশুরা সহজে হাঁটতে পারে, দৌড়ানো, উপরে চড়া, পা ছোঁড়া এবং লাফানো ইত্যাদি খুব সহজেই করতে পারে। সাধারণ জিনিসপত্র ও ছবি চিনতে পারে এবং আঙ্গুল দিয়ে চিহ্নিত করতে পারে। পাশাপাশি বাচ্চারা দুই বা তিন শব্দ দিয়ে বাক্য রচনা করতে শুরু করে। নিজের নাম ও বয়স বলতে পারে। এছাড়াও একটু বুদ্ধিদীপ্ত বাচ্চারা বিভিন্ন রঙের নাম বলতে পারে, সংখ্যা বুঝতে পারে। বিভিন্ন খেলনার বায়না করা এবং সেসব দিয়ে খেলা করা শুরু করে। এই বয়সের বাচ্চারা বাবা-মা, আত্মীয়-স্বজনদের প্রতি বিভিন্ন অঙ্গ ভঙ্গির মাধ্যমে ভালবাসার প্রদর্শন করে থাকে।
৩৮ মাস বয়সী সন্তানের জন্য যা কিছু জানা প্রয়োজন
আপনার সন্তানকে এখন পার্কে খেলাধুলা করাতে নিয়ে গেলে সে নিজে নিজেই স্লাইড দিয়ে নামতে পারে। তাকে সাহায্যের তেমন প্রয়োজন পড়ে না। সে এখন নতুন কোন কাজে অনেকক্ষণ মনোযোগ ধরে রাখতে পারে যেমন ক্রাফটিং করায় কিংবা ছবি আঁকায়। এছাড়া সে নিজেই নিজের জামা পরতে এবং খুলতে পারে।
৩৯ মাস বয়সী সন্তানের জন্য যা কিছু জানা প্রয়োজন
এই বয়সে সন্তান প্রতিদিনই নতুন কিছু শিখতে থাকে। এখন সে দেখে দেখে সাধারণ আকৃতি গুলো আঁকতে পারে। এছাড়াও ড্রয়িং খাতায় ভিন্ন ভিন্ন রঙের ব্যবহার করে। সে বাইরের জগত থেকে নানারকম শিক্ষা লাভ করে। বিভিন্ন পশু পাখির নাম চিনতে শিখে এবং তারা কিভাবে ডাকে সেটি পর্যবেক্ষণ করে। এই বয়সে শিশুরা তার বাবা-মায়ের কাছে অন্য বাচ্চাদের দেখলে ঈর্ষা পরায়ন আচরণ করে।
৪০ মাস বয়সী সন্তানের জন্য যা কিছু জানা প্রয়োজন
আপনার সন্তান এখন সিকোয়েন্স অনুযায়ী কাজ করতে শিখে। অর্থাৎ তাকে যদি বলা হয় ‘আগে খাওয়া শেষ করে পরে খেলতে যাবে’ তাহলে সে আপনার কথা মত আগের কাজটি আগে এবং পরের কাজটি পরে করবে। এখন নতুন নতুন অনেক কিছু শিখতে থাকে। তার বই থেকে কিংবা নার্সারি রাইমস দেখেও সে অতি দ্রুত নতুন নতুন শব্দ শিখে ফেলে। এই বয়সে তাকে প্রি প্লে স্কুলে দিলে সে খেলার ছলে অনেক কিছু শিখতে পারবে। সেইসাথে বন্ধুদের সাথে কিভাবে সম্মিলিতভাবে একসাথে থাকতে হয় সে বিষয়টিও বুঝতে পারবে।
৪১ মাস বয়সী সন্তানের জন্য যা কিছু জানা প্রয়োজন
আপনার সন্তান এই বয়সে তার গল্পের বই থেকে অনেক কিছু মনে করে আপনাকে শোনাবে কেননা তার স্মৃতিশক্তি এখন আগের থেকে আরো বেশি উন্নত হতে থাকে। এছাড়াও সে একই এবং ভিন্ন রকম বস্তুর মধ্যে পার্থক্য করতে শিখে। এই সময় স্ক্রিনের প্রতি তার প্রবল আগ্রহ তৈরি হয়। সে মোবাইল, ট্যাব কিংবা টিভিতে তার প্রিয় কার্টুনগুলো দেখার জন্য অস্থির হয়ে থাকে। এক্ষেত্রে আপনাকে অবশ্যই তার স্ক্রীন টাইম এর জন্য নির্দিষ্ট সময় বেঁধে দেওয়া উচিত এবং সেটি যেন কখনোই খুব বেশি সময় না হয় সেদিকে খেয়াল রাখুন। এই বয়সে শিশুরা তার বাবা-মায়ের চলাফেরা এবং কাজকর্ম অনুকরণ করতে খুব ভালোবাসে। সে বাসার বড়দের জুতা পড়ে সারা ঘর ঘুরে বেড়ানোতে খুবই আনন্দ পায়।
৪২ মাস বয়সী সন্তানের জন্য যা কিছু জানা প্রয়োজন
আপনার ছোট্ট সোনামণি এখন বেশ ভালোভাবেই চামচ ব্যবহার করে খাবার খেতে পারে। সে বিভিন্ন জিনিসের পরিমাপ সম্বন্ধে ধারণা লাভ করতে শুরু করে। যেমন সে কতটুকু লম্বা, গ্লাসে কি পরিমাণ পানি আছে এরকম আরো অনেক বিষয় নিয়ে তার আগ্রহ তৈরি হয়। এছাড়াও বিপরীত ধর্মী জিনিসগুলো সম্বন্ধেও সে ধারণা পেতে শুরু করে। সময় সম্পর্কে তার মধ্যে ধারনা তৈরি হয় যেমন গতকাল কি হয়েছিল সেটি সে মনে রাখতে পারে।
৪৩ মাস বয়সী সন্তানের জন্য যা কিছু জানা প্রয়োজন
আপনার ছোট্ট সোনামণিটি এখন স্কুলে তার একান্ত প্রিয় কাউকে বন্ধু বানিয়ে নেয়। যখন সে দেখে তার বন্ধুর সাথে তার জামা-কাপড়, জুতা, রংপেন্সিল ইত্যাদি মিলে যায় সে খুশীতে পুলকিত হয়ে ওঠে। সে তার বুড়ো আংগুল এবং তর্জনীর মধ্যে পেন্সিল ধরতে সক্ষম। প্রি-স্কুলে যাওয়ার কারণে সে রং করাতেও বেশ পটু হয়ে যায়।
৪৪ মাস বয়সী সন্তানের জন্য যা কিছু জানা প্রয়োজন
নিজের মন মত কাজ করা এই বয়সের শিশুদের একটি প্রধান বৈশিষ্ট্য। সে তার জামাকাপড় পছন্দ করা থেকে শুরু করে জুতা পরা পর্যন্ত সবকিছুই নিজ হাতে করতে চায়। তার প্রিয় মুভি কিংবা সিরিজ সে বারবার দেখতে পছন্দ করে। এখন থেকে আপনার শিশু স্বাবলম্বী হওয়া থেকে শুরু করে আত্মবিশ্বাসী আচরণও প্রদর্শন করে।
৪৫ মাস বয়সী সন্তানের জন্য যা কিছু জানা প্রয়োজন
এই বয়সে শিশুরা কোন কিছু থেকে উদ্ধার পাবার জন্য হাত-পা ছোড়াছুড়ি করে চিৎকার-চেঁচামেচি করতে পারে। তবে তার মধ্যে সৃজনশীল নতুন নতুন আইডিয়া তৈরি হয়। সে এখন বোধগম্য নানা রকম ছবি আঁকতে পারে। হতে পারে সেটি তার পরিবারের সদস্যদের ছবি কিংবা তার কোনো বন্ধুর ছবি। তার বন্ধুদের সাথে মজা করে খেলাধুলা করার প্রবণতা বৃদ্ধি পায়।