পুষ্টিকর খাবার কিভাবে আপনার সন্তানের ব্রেইন ডেভেলাপমেন্টে সাহায্য করে?

অভিভাবক হিসাবে আমরা সন্তানের সঠিক বেড়ে উঠা ও সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করতে চাই। আপনি নিশ্চয়ই জানেন একটা শিশু কি খাচ্ছে তার সাথে তার ব্রেইন ডেভেলাপমেন্ট সরাসরি যুক্ত। কিন্তু আসলে কতটা গুরুত্বপূর্ণ?

আজকে আমরা এই লেখায় এটাই জানবো পুষ্টিকর খাবারের সাথে আপনার সন্তানের মস্তিস্ক বিকাশের সংযোগ কতটা।

আমরা আমাদের অন্যান্য লেখায় এটাও জানিয়েছি আসলে পুষ্টিকর খাবার কোনগুলো, এবং কোন পুষ্টি কোন খাবারে আছে। এবং পাশাপাশি এটাও জানিয়েছি কোন বয়সে কোন ধরনের খাবারগুলো আপনার সন্তানের বয়স অনুযায়ী কতটা খাওয়া দরকার।

চলুন শুরু করি।

১। ব্রেইনের বৃদ্ধির বিল্ডিং ব্লক হচ্ছে বিভিন্ন পুষ্টি

একটা বাড়ি করতে যেমন ইট-সিমেন্ট-রড ইত্যাদি বিভিন্ন ধরনের জিনিস লাগে, তেমনি আমাদের ব্রেইনেরও এমন বিভিন্ন ধরনের পুষ্টি লাগে। ভিটামিন, মিনারেল, ওমেগা-৩ হচ্ছে ব্রেইন ডেভেলাপমেন্টের জন্য ইট আর সিমেন্টের মতো। ওমেগা-৩ পাওয়া যায় মাছে, বাদামে। এটি ব্রেইনের কোষ গঠনে সাহায্য করে এবং চিন্তা করার শক্তি বাড়ায়।

২। প্রাথমিক বছরগুলি গুরুত্বপূর্ণ

ব্রেইনের ডেভেলাপমেন্ট সন্তান জন্মের আগে থেকেই মায়ের গর্ভে থাকতেই শুরু হয়। এবং এরপর চলতে থাকে। প্রথম ৫ বছর বয়স পর্যন্ত ব্রেইন অনেকটা স্পঞ্জের মতো – জ্ঞান এবং দক্ষতা শুষে নেয়। এইসময় থেকেই শিশুকে পুষ্টিকর খাবার দিলে তার ব্রেইন শক্তিশালী হয়।

৩। স্মার্ট শিশুর জন্য স্মার্ট খাবার

কিছু খাবার আছে যেগুলো ব্রেইনের জন্য সুপারহিরোর মতো কাজ করে। যেসব খাবারে ভিটামিন ও মিনারেল আছে, যেমন ফল ও সবজি, এগুলো শিশুদের চিন্তাশক্তি বাড়াতে, শিখতে এবং স্মৃতিশক্তি বাড়াতে সাহায্য করে।ফল আর সবজি ব্রেইনের ইঞ্জিনের মতো। তাই সন্তানকে পর্যাপ্ত ফল ও সবজি প্রতিদিন খাওয়ানো খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

নিচের টেবিলে কোন বয়সের শিশুকে কতটা ফল ও সবজি খাওয়াতে হবে সেটা দেয়া হল।

৪। প্রোটিন পাওয়ার

প্রোটিন হচ্ছে এমন কর্মীবাহিনী যারা ব্রেইনকে যোগাযোগ করতে সাহায্য করে। ডিম, মাংস এসবে প্রোটিন আছে যা ব্রেইনের সেল বা কোষগুলোকে একে অপরের সাথে যোগাযোগ করতে সাহায্য করে। যত বেশি এমন যোগাযোগ হবে শিশুরা তত সহজে শিখতে পারবে আর সমস্যার সমাধান করার দক্ষতা বাড়বে।

৫। সুস্থ পেট, সুখী ব্রেইন

আপনি কি জানেন, আমাদের পেট আর ব্রেইন বন্ধু। অনেক ফাইবার আছে এমন খাবার যেমন ফল, রুটি, ব্রেড, বাদামী চালের ভাত এগুলো পেটকে সুস্থ রাখে। পাশাপাশি নিয়মিত দই খেলে পেট ভালো থাকে। আর যখন শিশুর পেট সুস্থ থাকে, তখন ব্রেইনও আনন্দে থাকে।

৬। শেখার শক্তি

ব্রেইন হচ্ছে একটা গাড়ির মতো যেটা চালানোর জন্য তেল লাগে। ফল, বাদাম, রুটি, ভাত, ব্রেড এগুলো শিশুর ব্রেইনকে এনার্জি দেয় চিন্তা করার, খেলার আর শেখার জন্য। এই খাবারগুলো নিয়মিত খেলে শিশুর মনোযোগ বাড়ে আর সে স্কুলে ভালো করে।

৭। ব্রেইনের সুপারপাওয়ার ভিটামিন

ভিটামিন একটা ম্যাজিকের মতো যা ব্রেইনকে সবচেয়ে সচল রাখে। যেসব খাবারে ভিটামিন আছে, যেমন কমলা এবং সবুজ সবজি, সেগুলো ব্রেইনকে করে শার্প আর শক্তিশালী। ভিটামিন শিশুকে আনন্দে রাখে এবং সে টায়ার্ড ফিল করে না।

৮। বাজে ও অপুষ্টিকর খাবার বাদ দিন

যেসব খাবারে অনেক চিনি থাকে যেমন চকলেট, আইসক্রিম, কোল্ড ড্রিঙ্কস – এগুলো ব্রেইনের জন্য ক্ষতিকর। এগুলো খেলে শিশু ক্লান্তবোধ করে এবং ক্লিয়ারলি চিন্তা করতে পারে না। এজন্য সন্তানের ব্রেইনকে সুস্থ রাখতে ফল, দই, বাদাম – এগুলো দিন।

৯। পানির বিকল্প নেই

আমাদের ব্রেইনের পানির প্রয়োজন হয় শেখার জন্য, চিন্তা করার জন্য, সব কিছুর জন্য। তাই শিশুকে পর্যাপ্ত পানি খাওয়ান। কারণ পানি হচ্ছে ব্রেইনের জন্য একটা রিফ্রেশিং ড্রিংক।

১০। হেলদি হ্যাবিট অভ্যাস করা

শিশু যখন অল্প বয়স থেকেই ভালো খাবার খাবে, তখন সে স্বাস্থ্যকর খাবার খেতে ভালবাসবে। এতে করে শিশু শারীরিকভাবে শক্তিশালী হয়ে উঠবে ও মানসিকভাবে স্মার্ট হবে। কালারফুল ফল, সবজি, দই, দুধ, রুটি এগুলো নিয়মিত খেলে আপনার সন্তানের ব্রেইন হবে শার্প।

আপনি কি ধরনের খাবার সন্তানকে খাওয়াচ্ছেন সেটাই তার ভবিষ্যৎ কতটা উজ্জ্বল হবে সেটা নির্ধারণ করে ফেলে। তার ব্রেইন ডেভেলাপমেন্ট নির্ভর করে সে কি কি ধরনের পুষ্টিকর খাবার খাচ্ছে। তাই ৫ বছরের মধ্যেই সন্তান কি ধরনের পুষ্টি পাচ্ছে সেটাই নির্ধারণ করে দেয় সন্তানের ব্রেইন ডেভেলাপমেন্ট কতটা ভালো হবে।

তাই পুষ্টিকে বাদ দিয়ে ব্রেইন ডেভেলপমেন্ট এবং আর্লি লার্নিং ভাবা যায় না। তাই সন্তানকে কি দিচ্ছেন খেতে, আর সে কি খাচ্ছে সেদিকে সজাগ দৃষ্টি রাখুন।


সবসময় নিয়ম করে এভাবে পুষ্টিকর খাবার দেয়া শিশুদের সম্ভব হয়ে উঠে না। আর গবেষণায় দেখা গেছে আমাদের দেশের শিশুদের মধ্যে সাধারণত জিঙ্ক, আয়োডিন, আয়রনের ঘাটতি দেখা দেয়। তাই এই ঘাটতিপূরণের জন্য কাজ করছে গ্রামীণ-ডানোন। তাদের শক্তি+ দইয়ে শিশুদের জন্য এই পুষ্টি উপাদানগুলো দেয়া আছে। শিশুরা যেহেতু অনেক সময় সবজি বা পুষ্টিকর খাবারগুলো খেতে চায় না, তাই প্রতিদিন এক কাপ শক্তি দই আপনার সন্তানের এই পুষ্টিগুলো নিশ্চিত করতে পারে।

ToguMogu Logo

ToguMogu is a parenting app offering essential support from family planning to raising children up to age 10.

ToguMogu

Contact

  • +88 01958636805 (Customer Care)
  • [email protected]
  • Rezina Garden, House 67/A, Road 9/A, Dhanmondi, Dhaka 1209, Bangladesh

Copyright © 2025 ToguMogu All rights reserved.