চাইল্ড ওবেসিটি

নাদুসনুদুস বাচ্চা কার না পছন্দ? তাই বলে সেটা যদি মাত্রাতিরিক্ত হয়ে যায় তাহলে কিন্তু সেটা বেশ চিন্তার ব্যাপার। অতিরিক্ত ওজন বাচ্চার স্বাস্থ্যঝুকি বৃদ্ধি করে। জন্মের ছয় মাস পর থেকে বাচ্চা যখন বুকের দুধের পাশাপাশি বাড়তি খাবার খাওয়া শুরু করে, তখন বেশিরভাগ মায়েরাই বুঝতে পারেন না যে বাচ্চা কি পরিমানে খাবে। তখন দেখা যায় যে, মায়েরা বেশ জোর করেই বাচ্চাকে অতিরিক্ত খাবার খাওয়াচ্ছেন। প্রতিদিন এই একটু একটু করে বেশি খাবার খেতে খেতে চাচ্চা একসময় খুব মুটিয়ে যায়। 

বাচ্চার মুটিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে শুধু মায়েদের অবদান নয় বাবার অবদানও আছে। বেবিকে নিয়ে বাবা বেড়াতে গেছেন, আদর করে চিপস চকোলেট, আইস্ক্রিমের মত অধিক ক্যালরীযুক্ত খাবার কিনে দিচ্ছেন বাবা। প্রতিদিন অফিস থেকে ফেরারা পথেও এসব খাবার নিয়ে আসছেন আদরের সন্তানের জন্য। কিন্তু উনি বুঝতে পারছেন না যে, এতে বাচ্চার ক্ষতিই হচ্ছে। 

এবার আসি আত্মীয়স্বজনের ভুমিকায়। আপনার বাড়িতে যখনি কেউ বেড়াতে আসে, তখন বাড়ির অন্য সদস্যদের জন্য ফল বা মিষ্টি যাই আনুক না কেন, আপনার বাচ্চার জন্য চিপস চকোলেট, আইস্ক্রিম বা বার্গার বা এই জাতীয় কোন খাবার নিয়ে আসছেন। ফলাফল আপনার চোখের সামনে। 

বাচ্চার অতিরিক্ত ওজন কমানোর উপায় কি??

বাচ্চার ওজন কমানো খুব সেন্সিটিভ একটা বিষয়। কারন এটা আপনার বাচ্চার গ্রোথ টাইম। এই সময়ে যদি আপনি আপনার বাচ্চার ওজন কমাতে চান তাহলে তার স্বাভাবিক গ্রোথ টা ব্যাহত হতে পারে। গ্রোথ বলতে কিন্তু শুধু শারিরীক গ্রোথ নয়, আমি মানসিক গ্রোথের কথাও বলছি। তাই ওজন কমানোর নামে যদি আপনি বাচ্চার খাবার কমিয়ে দেন তাহলে সেটা হিতে বিপরীতও হতে পারে। এতে আপনার আদরের সন্তানের শারিরীক এবং মানসিক বিকাশ বাধাগ্রস্থ হতে পারে।

তাহলে উপায়???

হ্যা উপায় আছে, আর তা হল ওজন না কমানো। শুনতে হাস্যকর লাগলেও এটাই ঠিক। আমার কাছে যত চাইল্ড ওবেসিটি কেস আসে, আমি সবাই কে আগে খুব ভাল করে বোঝানোর চেষ্টা করি যে ওজন না কমানোর জন্য। আমি সবসময় বলি যে, ওজন যেটা আছে সেটা ধরে রাখার জন্য। মানে এখন যে ওজন টা আছে সেটা যেন আর বেশি না হয়। কারন বাচ্চারা ধীরে ধীরে লম্বা হবে এবং এই বর্তমান ওজনটাই একসময় বাচ্চার উচ্চতার সাথে পারফেক্ট হয়ে যাবে। আর যদি ওজন কমাতেই হয় তাহলে মাসে সর্বোচ্চ ১ থেকে ২ কেজি কমানো যাবে। তার বেশি কমানো উচিৎ নয়।

মনেকরুন আপনার বাচ্চার বয়স ১১ বছর, ওজন ৫০ কেজি এবং উচ্চতা ১৩৮ সেন্টিমিটার। তার স্বাভাবিক ওজন হবে সর্বোচ্চ ৩৪ কেজি। তারমানে তার অতিরিক্ত ওজন ১৬ কেজি। এখন এই ৫০ কেজি ওজনটা যদি আগামি একবছরে আর এক কেজিও বৃদ্ধি না পায়, তাহলে একবছর পরে আপনার বাচ্চার বয়স হবে ১২ বছর। আর ১২ বছর বয়সে বাচ্চার স্বাভাবিক ওজন হতে হবে সর্বোচ্চ ৪০ কেজি এবং উচ্চতা হবে ১৪৮ সেন্টিমিটার। অর্থ্যাৎ আপনার বাচ্চা এখন মাত্র ১০ কেজি ওভার ওয়েট। অর্থ্যাৎ কোন ওজন না কমিয়েও আপনার বাচ্চার ওজন ৬ কেজি কমেছে। 

এইভাবে যদি আরো একবছর এই ৫০ কেজি ওজনটা ধরে রাখা যায়, তাহলে পরবর্তী এক বছরে উচ্চতার সাথে তার ওজন টা একেবারে পারফেক্ট হয়ে যাবে। আর এর মাঝে যদি মাসে ৫০০ গ্রাম করেও ওজন কমানো যায়, তাহলে অতিরিক্ত আরো ৬ কেজি ওজন লস হবে। আর এই ব্যাপারে আপনি আপনার পুষ্টিবিদের পরামর্শ নিতে পারেন। আপনার পুষ্টিবিদ আপনাকে একটা ডায়েট চার্টের মাধ্যমে বুঝিয়ে দিবেন যে, কিভাবে খাবার খেলে ওজন আর বাড়বে না। সুস্থ থাকুন, ভাল থাকুন। 

পুষ্টিবিদ মোঃ ইকবাল হোসেন 

সিনিয়র পুষ্টি কর্মকর্তা 

চট্টগ্রাম ডায়াবেটিক জেনারেল হাসপাতাল

খুলশি, চট্টগ্রাম।

চেম্বারঃ

সার্জিস্কোপ হাসপাতাল, ইউনিট-২

কাতালগঞ্জ, চট্টগ্রাম।

ToguMogu Logo

ToguMogu is a parenting app offering essential support from family planning to raising children up to age 10.

ToguMogu

Contact

  • +88 01958636805 (Customer Care)
  • [email protected]
  • Rezina Garden, House 67/A, Road 9/A, Dhanmondi, Dhaka 1209, Bangladesh

Copyright © 2025 ToguMogu All rights reserved.