সাধারন বিষয় গুলোঃ
✅ছোট ছোট খেলনা গুলো আপনার বাবু এখন হাতের মধ্যে শক্ত করে ধরতে শিখে।
✅এখন থেকে তার হাতে খেলনা জাতীয় জিনিস যেমন ঝুনঝুনি ধরিয়ে দিলে তার কোন কিছু ধরার প্র্যাকটিস হয়।
✅তার মাথার পেছনের স্ক্যাল মোটামোটি শক্ত হয়। কিন্তু মাথার উপরের অংশ এখনো নরম থাকে।
✅মাথা ৪৫ ডিগ্রি কোণে ঘুরাতে পারে।
?উচ্চতাঃ ৫৬.১-৫৮.৪ সে.মি
?ওজনঃ ৫.৩-৫.৬ কেজি
?মাথার আকৃতিঃ৩৮.৩-৩৯.১ সে.মি
মূল পরিবর্তনঃ
এই সপ্তাহে আপনার বাবু তার মাথা স্থিরভাবে ধরে রাখতে পারে। বাবুকে উপুড় করে শুইয়ে দিলে সে মিনি পুশ আপ দেওয়ার চেষ্টা করে। এছাড়াও আপনি যদি তাকে ডাক দেন সে আপনার কন্ঠ শুনে রেসপন্স করে এবং হাসে।
দৈহিক পরিবর্তনঃ
এই সময়ে বাবু দুই হাত এক সাথে করতে পারে। হাতের তালু খোলা এবং বন্ধ করা শিখে এবং তার চোখের দৃষ্টি ও দুই হাত একসাথে আনার মধ্যে একটি সমন্বয় সৃষ্টি হয়।
উজ্জ্বল রঙের বস্তু কিংবা খেলনার দিকে তার আকর্ষণ তৈরি হয়। সেএকনাগাড়ে সেগুলোর দিকে তাকিয়ে থাকে।
?চিন্তার বিষয়ঃ
?তার হাতে ছোট কোন জিনিস দিলে যদি সে তা ধরতে না পারে কিংবা ধরতে চেষ্টা না করে।
?সে যদি এখনো মাথা সোজা করে ধরে রাখতে না পারে।
?তার চোখের মনি যদি সে সব দিকে নাড়াতে না পারে।
?এছাড়া তার হাতে কোন খেলনা বা জিনিস দিলে সে ধরে সেটি মুখে দেওয়ার চেষ্টা না করে।
বুদ্ধিবৃত্তিক পরিবর্তনঃ
আপনার বাবু এখন আপনার চেহারা এবং গন্ধ চিনতে পারে। এখন সে তার পছন্দের খেলনা নিয়ে খেলা করতে ভালোবাসে। বিভিন্ন ধরনের খেলনার মুভমেন্ট এবং সাউন্ড ইফেক্ট তাদের মধ্যে আলোড়ন সৃষ্টি করে।এছাড়াও তার চোখের মুভমেন্ট নিয়ন্ত্রিত ভাবে হয় অর্থাৎ দুই চোখের মনি একইসাথে নড়াচড়া করে।
?চিন্তার বিষয়ঃ
?জোরে শব্দে বাবু চমকে না গেলে বা রেসপন্স না করলে।
?সে তার নিজের হাত নিয়ে খেলা না করলে।
?মুভিং অবজেক্টের প্রতি খেয়াল না করে।
মানসিক এবং আচরণগত পরিবর্তনঃ
এই বয়সে বাবু তার আশেপাশে থাকা ছোট বাচ্চাদের প্রতি অনেক বেশি আকর্ষিত হয়। সে ছোট বাচ্চাদের দেখলে খুশি হয় এমনকি আয়নায় নিজেকে দেখেও সে অনেক পুলকিত হয়।
আপনার সোনামণি এখন আপনার ইমোশন বা আবেগ বুঝতে চেষ্টা করে। আপনি তাকে কি বলতে চাচ্ছেন তা সে মনোযোগ দিয়ে শুনে এবং আপনার মুখের এক্সপ্রেশন দেখে সে অনুভব করার চেষ্টা করে।
কান্না করা ছাড়াও সে মুখে নির্দিষ্ট কিছু সাউন্ড করে আপনার সাথে কথা বলার চেষ্টা করে। তার মুখের সাউন্ড হয় সাধারনত কু..কু.., ওওওও..,, আআহ ।এছাড়া সে মুখ দিয়ে গার্গেল শব্দ করে।
?চিন্তার বিষয়ঃ
? বাসার মানুষদের চেহারা দেখেও যদি কোন রেসপন্স না করে কিংবা না হাসে।
?আপনার কণ্ঠ শুনেও যদি না হাসে।
?নির্দিষ্ট কিছু মানুষকে দেখে যদি কাঁদে কিংবা ভয় পায়।
স্বাভাবিক ঘুমের ধরনঃ
এই সময়ে বাচ্চারা নির্দিষ্ট ঘুমের লক্ষণ প্রকাশ করে। তার ঘুম পেলে সে হাই তুলতে শুরু করে এবং কোন দিকে স্থির ভাবে তাকিয়ে থাকতে পারে না। এই পর্যায়ে তাকে ঘুম পাড়িয়ে দেওয়াই ভালো। তার ঘুমের ব্যাঘাত হলে সে খিটখিটে আচরণ করে এবং কান্নাকাটিও করতে পারে।
এ পর্যায়ে তার ঘুমের একটা মোটামুটি রুটিন তৈরি হয়ে যায়। অর্থাৎ সে ডেইলি একটি নির্দিষ্ট সময়ে ঘুমাতে যায়। ঠিকমতো ঘুম হওয়া তার শারীরিক এবং মানসিক বিকাশের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাই তার ঘুমের সময় যেন সে ঠিকভাবে ঘুমাতে পারে তা নিশ্চিত করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
?চিন্তার বিষয়ঃ
আপনার বাবুর পর্যাপ্ত পরিমাণ ঘুম না হওয়া একটি চিন্তার বিষয়। ঘুম না হলে তার শারীরিক বিকাশ যেমন বাধাগ্রস্ত হয় তেমনি তার মেজাজও অনেক খিটখিটে হয়ে যায়। তখন হয়তো সে খুব বিরক্তি নিয়ে জেগে থাকে এবং কান্নাকাটি করতে থাকে।
খাবার এবং পুষ্টিঃ
এখনও আপনার বাবুর খাবার শুধুমাত্র বুকের দুধ। তার বাড়তি গ্রোথ দেখে আপনার মনে হতে পারে তাকে বাইরের খাবার খাওয়ানো উচিত। কিন্তু তার মোটেও প্রয়োজন নেই। যদি পর্যাপ্ত পরিমাণ বুকের দুধ না পায় তাহলে তাকে ফর্মুলা মিল্ক খাওয়ানো যেতে পারে।
মায়েদের উচিত এমন সব খাবার খাওয়া যার ফলে বুকের দুধের পরিমাণ বৃদ্ধি পায়। কালোজিরা, লাউ, শিং মাছ , মাগুর মাছ, ঝোল জাতীয় তরকারি, সাবুদানা ইত্যাদি খাবার বুকের দুধের পরিমাণ বৃদ্ধি করে। নিয়মিত এসব খাবার খেলে আশা করা যায় বাবুর খাবারের চাহিদা বুকের দুধেই পূরণ হবে।
ক্যালরি এবং ফুড চার্টঃ
এই বয়সে বাবুর প্রতিদিনের প্রয়োজনীয় ক্যালরি হলো ৫৭৩.৪কিলোক্যালরি।
যেসব বিষয়ে সাবধান থাকতে হবেঃ
যেহেতু আপনার শিশু এখন হাত দিয়ে অনেক কিছু ধরা শিখে তাই আপনাকে সব সময় সাবধান থাকতে হবে যেন তার আশেপাশে এমন কোন জিনিস না থাকে যা ধরার ফলে তার কোন বিপদ ঘটতে পারে। বিছানার ওপরে কিংবা তার শোয়ার জায়গায় কখনোই ধারালো বা শক্ত কোন জিনিস রাখা যাবে না। এছাড়াও তার খেলনা কেনার সময়ও এমন সব খেলনা কিনতে হবে যা দিয়ে শিশু ব্যথা না পায়। সে তার খেলনা গুলি ধরে মুখের সামনে নিয়ে আসে এবং তার হাত থেকে অনায়াসেই সেগুলি মুখের উপরে পড়ে যায়। এতে করে খেলনা যদি শক্ত হয় তাহলে সে ব্যথা পেতে পারে। তাই এইসব বিষয়ে অভিভাবকদের সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে।
অভিভাবকদের জন্য টিপসঃ
বাবুকে নিয়মিত শরীর মাসাজ করে দিন। এতে করে তার শারীরিক বিকাশ নিশ্চিত হয়। এই সময় আপনার ছোট্ট সোনা মনি নানা রকম আওয়াজ করতে শিখে। তাই আপনি তার সাথে আওয়াজ করে কথা বলুন। এতে তার মানসিক বিকাশ বৃদ্ধি পাবে। বাবুকে এখন থেকে গান বাংলা ছড়া শুনিয়ে তার সাথে সময় কাটান দে বাচ্চার সাথে আপনার একটি দৃঢ় বন্ধন তৈরি হবে।কে অনেকক্ষণ ধরে না খাইয়ে রাখা যাবে না। যেহেতু প্রতিনিয়ত এখন তার ওজন বৃদ্ধি পায় তাই ক্ষুধা লাগার সাথে সাথে কিংবা তার আগেই তাকে খেতে দিতে হবে। বাবুর ঘুমের সময় যথাযথভাবে পরিবেশ তৈরি করতে হবে। ঘুমের সময় আশেপাশে খেলনা জাতীয় জিনিস বা এমন কোন জিনিস যা তার মনোযোগ আকর্ষণ করে সেগুলো সরিয়ে ফেলতে হবে।