মীরার প্রেগন্যান্সির ৫মাস চলছে। মীরা এখনো অফিস থেকে মাতৃত্বকালীন ছুটি নেননি। অফিসের সহকর্মীরা অনেকেই প্রায়ই জিজ্ঞাসা করেন, মীরার পেট এখনো বুঝা যাচ্ছে না কেন? খাওয়া-দাওয়া কি কম হচ্ছে? কোন স্বাস্থ্যগত সমস্যা? আত্মীয়-স্বজন যারাই মীরাকে দেখতে আসছে, তারাও একই প্রশ্ন করছেন। কিন্তু, ডাক্তারের পরামর্শ মেনেই দিন কাটাচ্ছে মীরা। খাওয়া-দাওয়াও পরিমাণ মতই করা করা হচ্ছে। চারপাশের এত কথা শুনতে শুনতে, মীরার দুশ্চিন্তা শুরু হয়। তার গর্ভের সন্তান ঠিকঠাক বেড়ে উঠছে তো? অনেক হবু মাই এমন পরিস্থিতির মুখোমুখি হন। পেট বুঝা না বুঝা নিয়ে দুশ্চিন্তার কারণ নেই। এক এক মা এক এক ধরণের গর্ভ ও মাতৃত্বকালীন অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে যান। আপনার গাইনোকলজিস্ট যদি বলেন সবই ঠিক চলছে, তবে খামাখা দুশ্চিন্তার একদমই কারণ নেই।
Category: প্রেগনেন্সি সিরিজ
গর্ভকালীন ডায়াবেটিস: সম্ভাব্য জটিলতা ও প্রতিকার
গর্ভকালীন ডায়াবেটিস কাকে বলে?
উত্তর : গর্ভাবস্থায় যে কোনো সময়ে ডায়াবেটিস শুরু হলে বা প্রথমবারের মত ধরা পড়লে তাকে গর্ভকালীন বা Gestational ডায়াবেটিস বলে। গর্ভকালীন ডায়াবেটিস একধরনের সুপ্ত(latent) ডায়াবেটিস। ল্যাটেন্ট ডায়াবেটিস বলা যেটা কোনো স্ট্রেসফুল কন্ডিশনে ধরা পড়ে নরমালে থাকে না।যেমন কোনো সার্জিক্যাল অপারেশন বা প্রেগন্যান্সি বা ইনফেকশনে হয়ে থাকে।
গর্ভাবস্থায় বিষণ্ণতা
গর্ভকালীন বিষণ্ণতা এমন একটি সমস্যা যা প্রায় শতকরা দশ ভাগ গর্ভবতী মহিলাকে আক্রমন করে। এর প্রভাব মা ও শিশুর শরীরে ও মনে খুবই প্রকট, তারপরও আমাদের সমাজে দেখা যায় চিকিৎসক থেকে শুরু করে পরিবারের সদস্য, এমন কি মাঝে মাঝে গর্ভবতী নিজেও এই সমস্যা কে এড়িয়ে যায়। কোন নারী যদি আগে বিষণ্ণতার কোন চিকিৎসার ভেতর থাকেন, দেখা যায় গর্ভবতী জানার সাথে সাথে ওষুধ বন্ধ করে দেন এই ভেবে যে এতে হয়তো বাচ্চার ক্ষতি হবে। কিন্তু আসল কথা হচ্ছে, অনেক গবেষণায় দেখা গেছে ঠিকমতো চিকিৎসা না গ্রহন করলেই মা ও বাচ্চার উপর ক্ষতির পরিমান ভয়ানক ভাবে বেড়ে যায়। মায়ের উপর ক্ষতির পরিমান যেমন দীর্ঘস্থায়ী হয়, তেমনি শিশুর উপরও মায়ের বিষণ্ণতার প্রভাব থাকে অনেকদিন পর্যন্ত। গবেষণায় দেখা যায়, যেসব বাচ্চা গর্ভে থাকাকালীন মায়ের বিষণ্ণতার স্বীকার হয়, তারা বড় হলে আক্রমণাত্মক এবং জেদি হয় এবং তাদের সামলানো কঠিন হয়ে থাকে। তাই শুধু চিকিৎসক না, পরিবারের সবাই এমন কি বন্ধু বান্ধবদের এই ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে যাতে যাদের তাদের কাছের কোন গর্ভবতী সুপ্ত বিষণ্ণতার কারনে কষ্ট না পায়। প্রেগনেন্সিতে বিষণ্ণতা এবং সাধারণ মন খারাপ বা ভালো না লাগার মধ্যে বিভাজন করা সহজ ব্যাপার নয়। কারন এই সময় নানা কারনেই মনের পরিবর্তন হতে পারে, কিছু ক্ষেত্রে ঘনঘনই হতে পারে। তাই কোনটা সাধারন মন খারাপ বা ভালো না লাগা আর কোনটা বিষণ্ণতা তা জানতে হবে। কারন বিষণ্ণতায় ডাক্তারি সাহায্য না নিলে মা ও শিশুর আসুন জেনে নেই কখন বুঝতে হবে এটা বিষণ্ণতা! – দুই সপ্তাহের বেশি মন খারাপ থাকলে। -যেসব জিনিস আগে উপভোগ করতেন, সেটা আর ভালো না লাগলে। – চারপাশের কোন ব্যাপারে আর কোন আগ্রহ না থাকলে। – যেকোনো সমস্যায় নিজেকেই দোষী ভাবলে। – কোনকিছুতেই মনোযোগ দিতে না পারলে। – নিজেকে মূল্যহীন ভাবতে শুরু করলে। – খুব বেশি বা একেবারেই কম ঘুমালে।কোন ক্ষতিও হয়ে যেতে পারে।
গর্ভাবস্থায় হেপাটাইটিস বি; কি করণীয়?
নিশি প্রথমবারের মত মা হতে চলেছে। আনন্দের সীমা নেই অনাগত সন্তানকে ঘিরে। এরইমাঝে সে রেগুলার ডাক্তার চেক আপ এ গিয়ে জানতে পারলো সে হেপাটাইটিস বি ভাইরাস এ আক্রান্ত। নিশি সহ পুরো পরিবার এখন হতবাক। কিছুই বুঝতে পারছে না এখন তারা কি করবে! আর নবাগত সন্তানেরই বা কি হবে? নিশির মত বাংলাদেশে প্রায় ৩.৫% গর্ভবতী মায়েরা হেপাটাইটিস বি ভাইরাস বহন করছে (ন্যাশনাল লিভার ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশ এর মতে)। তাই প্রত্যেক গর্ভবতী মায়ের উচিৎ এই রোগ সম্পর্কে জেনে রাখা যাতে গর্ভাবস্থায় সঠিক সিদ্ধান্ত
গর্ভবতী স্ত্রীর প্রতি স্বামীর দায়িত্ব
একটি সন্তানের দায়িত্ব বাবা-মা দুইজনেরই সমান। মায়ের দায়িত্ব শুরু হয় বাচ্চা গর্ভে ধারণের মাধ্যমে, আর বাবার দায়িত্ব শুরু হয় তার গর্ভবতী স্ত্রীর যত্ন নেয়ার মাধ্যমে। আমাদের দেশে স্বামীদের মধ্যে এখনও গর্ভবতী স্ত্রীর যত্নের ব্যাপারটা ঐভাবে আসেনি। অনেকে জানেনই না, এই সময়ে মেয়েদের মানসিক এবং শারীরিক কি কি পরিবর্তন আসে। হাসিখুশি মেয়েটা কেন কথায় কথায় কেঁদে ফেলে অথবা একদম শান্ত মেয়েটা কেন ছোটখাটো ব্যাপারে রেগে মেগে একাকার হয়, তার সঙ্গীর জন্য এটা বের করাও কম কঠিন কাজ না। গর্ভবতী স্ত্রীর প্রতি আপনার কি মনোভাব হওয়া উচিত, সেটা নিয়েই এই লিখাটি-
প্রসব পরবর্তী রক্তক্ষরণ
বিশ্ব ব্যাপী মাতৃমৃত্যুর অন্যতম কারণ হচ্ছে প্রসব পরবর্তী রক্তক্ষরণ বা সংক্ষেপে পি-পি-এইচ (PPH)। প্রায় ৪%-৬% ডেলিভারি এর সাথে পিপিএইচ জড়িত। প্রসবের পরবর্তী সময় থেকে ৪২ দিন পর্যন্ত স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি রক্তপাত হলে(নরমাল ডেলিভারির পর ৫০০ মি.লি এর বেশি বা সিজার ডেলিভারির পর ১০০০ মি.লি এর বেশি রক্তক্ষরণ) তাকে পি পি এইচ বলে। তবে পরিমাণের চেয়ে রুগীর অবস্থা বেশি গুরুত্বপূর্ণ। রুগীর রক্তচাপ এবং পালস এই ক্ষেত্রে বেশি বিবেচ্য।
গর্ভধারণের প্রস্তুতিসমূহ
“বিয়ে হয়েছে, বাচ্চা তো হবেই! এর আবার প্রস্তুতি কী?” Pregnancy সম্পর্কে বেশিরভাগ মানুষের ধারণা এমনটাই। কিন্তু আসলেই কি তাই? আমাদের বাসায় সম্মানিত বা আকাঙ্ক্ষিত কোনো অতিথি আসার আগে আমরা যেমন ঘরবাড়ি পরিষ্কার, রান্নাকরা ইত্যাদি প্রস্তুতি নিয়ে থাকি, ঠিক তেমনি আমাদের শিশুও আমাদের জীবনের এক বহুমূল্য, বহু প্রত্যাশিত অতিথি। সবচেয়ে বড় কথা, সে গড়ে উঠবে – বেড়ে উঠবে একদম শূন্য থেকে শুরু করে, তিলে তিলে অন্য একটি শরীর থেকে তার প্রাণ সঞ্চারী উপাদান সংগ্রহ করে। পরিবেশের যে কোনো বিরূপ বা ক্ষতিকর উপাদান তাকে ঝুঁকির মুখে ফেলতে পারে।
গর্ভবতী নারীর সুস্থতায় কিছু গুরুত্বপূর্ণ ডাক্তারি পরামর্শ
গর্ভধারণ যে কোন নারীর জীবনে পরম আকাঙ্ক্ষিত মুহূর্ত। এই সময়ে গর্ভবতী নারীর সুস্থতায় তার গুরুজন নানা উপদেশ দেয় যা মানতে গিয়ে অনেক সময় তা ভুল উপদেশ হওয়াতে ক্ষতির কারণ হয়। অনেক উপদেশ ক্ষেত্র বিশেষে মা ও বাচ্চার জীবনের ঝুঁকির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। এই জন্য কনসিভের পর পর-ই একজন গাইনী বিশেষজ্ঞের তত্ত্বাবধায়নে থেকে প্রেগনেন্সি নিশ্চিত করার পাশাপাশি কোন রিস্ক ফ্যাক্টর (যা মা অথবা বাচ্চার জন্য ঝুঁকিপূর্ণ) আছে কিনা দেখে নিতে হবে। আসুন তবে জেনে নিই গর্ভবতী নারীর কী করা উচিৎ আর কী না করা উচিৎ…
গর্ভধারণে ব্যর্থতা, কারণ ও প্রতিকার জানা আছে কি?
মাতৃত্ব একজন নারীর জীবনের সবচেয়ে আকাঙ্খিত অনুভূতি। প্রত্যেকটি মেয়েই চায় মা হতে। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য যে সব মেয়েই মা হতে পারে না। গর্ভধারণে ব্যর্থতা বা ইনফার্টিলিটি (infertility) আজকের দিনে খুব সাধারণ একটি ঘটনা।যদিও আমাদের সমাজে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে মেয়েদের দায়ী করা হলেও এর জন্য নারী বা পুরুষ উভয়েরই ব্যর্থতা থাকতে পারে। আমাদের আজকের আলোচনার বিষয় ইনফার্টিলিটি বা গর্ভধারণে ব্যর্থতার কারণ। চলুন এ বিষয়ে কিছু জেনে নেই!
মৃত সন্তান প্রসবের ৯টি কারণ জানা আছে কি?
মৃত সন্তান প্রসব করা বলতে প্রসবের পূর্বে গর্ভেই ভ্রূণের মৃত্যু হওয়াকে বুঝায়। এতে প্রসব হওয়া সন্তানের মধ্যে প্রাণের কোন চিহ্নই থাকে না। এটি গর্ভস্রাব এবং জীবিত সন্তান জন্ম দেয়া থেকে সম্পূর্ণ আলাদা। গর্ভস্রাব হচ্ছে গর্ভধারণের প্রথম দিকেই সন্তানহানী হওয়া এবং জীবিত সন্তান জন্ম দেওয়ার পরপরই সন্তান মারা যাওয়া মৃত সন্তান প্রসব করা থেকে একেবারেই আলাদা। মৃত সন্তান জন্ম দেওয়া হচ্ছে গর্ভধারণের ২০ থেকে ২৮ সপ্তাহে বা তার পরবর্তীতে ভ্রূণের গর্ভেই মৃত্যু হয়ে যাওয়া। কিন্তু এর কারণ কি? কেন হচ্ছে এই সমস্যা? প্রায়শই এর কারণ অজ্ঞাত থেকে যায়। বিভিন্ন কারণে এই সমস্যা হয়ে থাকে। আজকে আমরা আপনাদের জানাবো মৃত সন্তান প্রসবের ৯টি কারণ।