আপনার শিশু কি স্কুলে যেতে ভয় পায়? স্কুলে যেতে না চাওয়া, ব্যাখ্যাতীত ভয়, ঘর ছেড়ে যেতে অনর্থক উদ্বেগ, মাকে ছাড়তে না চাওয়া ইত্যাদিকে স্কুলভীতি বা School Phobia হিসেবে সনাক্ত করা হয়ে থাকে। স্কুলভীতিতে আক্রান্ত শিশু বাসায় থাকতে চায়, স্কুলে যেতে চায় না। মাঝে মাঝে লম্বা ছুটির পর স্কুল শুরু হলে শিশুকে স্কুলে ফেরাতে গেলে এই সমস্যা দেখা দেয়। কখনও কখনও পেটব্যথা বা মাথাব্যথার মিথ্যা অভিযোগ তুলে স্কুল ফাঁকি দেওয়ার প্রবণতাও লক্ষ্য করা যায়। আবার শিশুর ধারণক্ষমতার বাইরে অতিরিক্ত বোঝা চাপিয়ে দিয়ে সন্তানকে আতঙ্কিত করে তোলার মত মা বাবাও বিরল নয়।
কীভাবে সনাক্ত করবেন আপনার শিশু স্কুলভীতিতে আক্রান্ত?
প্রথমত, অনির্দিস্ট এবং ভিত্তিহীন শারীরিক সমস্যার অভিযোগ করা। কখনও মাথাব্যথা, কখনও পেটব্যথা। ঠিক স্কুলে যাওয়ার আগে আগে এই সমস্যা শুরু হওয়া, ঐ সময় পার হয়ে গেলে ব্যথা কমে যাওয়া। দ্বিতীয়ত, চিকিৎসক এবং ল্যাবরেটরি পরীক্ষায় কোন সমস্যা বা অস্বাভাবিকতা ধরা না পড়া। তৃতীয়ত, স্কুলের ফলাফলের অবনতি হওয়া।
কেন হয় স্কুলভীতি?
প্রথম কারণ, পড়ার অতিরিক্ত চাপ। দ্বিতীয় কারণ, স্কুল পরিবর্তন। তৃতীয় কারণ, কোন বিশেষ শিক্ষক বা শিক্ষিকাকে অপছন্দ করা। চতুর্থ কারণ, লম্বা ছুটির সময় শিশুকে অতিরিক্ত স্বাধীনতা দেওয়া ও নিয়ম শৃংখলাবিহীন জীবন যাপনে বাধা না দেওয়া। পঞ্চম কারণ, সহপাঠীদের উত্যক্তকরণ বা bullying.
প্রতিকারের উপায়ঃ
১। প্রায়ই স্কুলে যাওয়ার সময় বিভিন্ন শারীরিক সমস্যার অভিযোগ করলে প্রথমে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যান। চিকিৎসক ও ল্যাবরেটরি পরীক্ষার ফল স্বাভাবিক পাওয়া গেলে তার স্কুলভীতির কারণটি বুঝতে চেস্টা করুন। আপনার শিশুকে আপনার চেয়ে ভালো আর কে বুঝবে? তার মন বুঝতে চেস্টা করুন।
২। লম্বা ছুটি চলাকালীন শিশুকে অবাধ স্বাধীনতা দেবেন না। কিছুটা নিয়মের মধ্যে রাখতে চেস্টা করুন। প্রতিদিন ঠিক সময়ে ঘুম থেকে অথা, খাওয়া দাওয়া ও ঘুমাতে যাওয়ার সময়সূচি ঠিক রাখুন।তা না হলে ছুটি শেষে শিশুকে পুরনো রুটিনে ফিরিয়ে আনতে যথেস্ট দুর্ভোগ পোহাতে হতে পারে।
৩। নির্দিস্ট কোন শিক্ষক বা শিক্ষিকা অতিরিক্ত শাসন, বা কোন সহপাঠী তাকে উত্যক্ত বা bullying করছে কিনা এ বিষয়ে শিশুর সাথে খোলাখুলি কথা বলুন। তার সাথে অভিভাবক নয় বরং বন্ধুর মত আচরণ করুন।
৪। অভিভাবকদের সাথে স্কুল শিক্ষক শিক্ষিকাদের নিয়মিত যোগাযোগ এক্ষেত্রে অপরিহার্য। শিশুকে তার বয়সের উপযোগী ধারণক্ষমতার অতিরিক্ত চাপ দেওয়া হচ্ছে কিনা লক্ষ্য করুন। এসব কিছুতেই কাজ না হলে, শিশু বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।
শিশুর যেকোন মানসিক বা আচরণগত সমস্যায় অনেক ক্ষেত্রেই বাবা-মায়ের সাথে তাদের আন্তরিক সম্পর্কটুকু থাকে না। শিশুকে বুঝতে চেষ্টা করার প্রধান উপায় হচ্ছে তার সাথে গুণগত সময় পার করা। যাতে শিশুর সাথে আপনার আন্তরিকতার জায়গাটুকু তৈরি হয়। গুণগত সময় কাটানোর সবচেয়ে সহজ উপায় হচ্ছে শিশুর সাথে বই পড়াতাই সংগ্রহে রাখুন শিশুর মানসিক বিকাশে সহায়ক ভালো ভালো গল্পের বই। "আমার প্রথম পড়া" সিরিজটি দেখতে নিচের ছবিতে ক্লিক করুনবা খেলা।
সন্তানের সৃজনশীলতার চর্চা করান কিডসটাইমের কোর্সে।কিডসটাইমের কোর্স গুলো দেখতে ভিজিট করুন নিচের লিংকে :