ToguMogu
ToguMogu
article.title
 Jun 10, 2019
 5801

শিশুর ডায়াপার থেকে র‍্যাশ হলে কি করবেন?

কাপড় নাকি ডিসপোজেবল কিছু? কোনটি বেছে নেবেন- এই ভাবনায় পড়েন অনেক বাবা-মা। বিশেষ করে নবজাতক শিশুকে নিয়ে এ ধরনের চিন্তা ঘুরপাক খেতে থাকে। কিন্তু ছোট্ট শিশুর ক্ষেত্রে যে ধরনের ডায়াপার বা পোশাকই পড়ানো হোক না কেন, সমস্যা যা হওয়ার তার ঝুঁকি একই। কারণ, শিশুজীবনের প্রথম কয়েক বছর শিশুর নিচের পোশাকটির প্রধান কাজ হচ্ছে নিয়ন্ত্রণহীন প্রকৃতির ডাকপ্রসূত ফলকে ধারণ করা। সোজা কথায় শিশুর নিচের পোশাক অন্তত প্রথম এক-দুই বছর প্রস্রাব ও পায়খানার সংস্পর্শে বেশি আসে। আর এ কারণে শিশুর নিতম্বে লালাভ চাকার মতো বা ফুসকুড়ি হয়ে ভেসে উঠতে পারে। যাকে বলা হয় ডায়াপার র‍্যাশ বা নিচের পোশাকজনিত ত্বকের ফুসকুড়ি।

 

ডায়াপার র‍্যাশ কেন হয়?

শিশুর কোমল সংবেদনশীল ত্বক যখন বেশকিছু সময় ধরে অথবা বারবার প্রস্রাব ও পায়খানার সংস্পর্শে আসে, তখন আর্দ্রতার কারণে ত্বকের তৈলাক্ত প্রাকৃতিক স্তরের প্রতিরোধ ভেঙে পড়ে। এতে ত্বক লালাভ চাকার মতো হয়ে ফুলে ওঠে অর্থাৎ ত্বকে ফুসকুড়ির মতো দেখা যায়। শিশুর নিচের পোশাক কাপড়ের কিংবা একবার ব্যবহারযোগ্য কোনো জিনিসেরই হোক না কেন, ডায়াপার র‍্যাশ উভয় ক্ষেত্রেই হতে পারে। সৌভাগ্যক্রমে ডায়াপার র‍্যাশ বা নিচের পোশাকজনিত ত্বকের ফুসকুড়ি থেকে তেমন জটিলতা সৃষ্টি হয় না। কিন্তু তারপরও শিশুর স্বস্তির কথা ভেবে শিশুর প্রতি একটু বাড়তি দৃষ্টি দিতে হবে। লক্ষ করতে হবে- শিশু হাত-পা ছুড়ছে কি না, বেশি নড়াচড়া করছে কি না। শিশুর মধ্যে এ ধরনের অঙ্গভঙ্গি থেকে বুঝতে হবে হয়তো শিশু প্রস্রাব-পায়খানা করেছে। আর তেমনটি হয়ে থাকলে দেরি না করে শিশুর প্রতি যত্নবান হতে হবে। আর তবেই ডায়াপার র‍্যাশজনিত সমস্যাকে সঠিকভাবে নিয়ন্ত্রণ করার জন্য কিছু বিষয়কে গুরুত্ব দিতে হবে।

 

কাপড়ের ডায়াপারই ভালো

শিশুর জন্য কাপড়ের ডায়াপারটাই ভালো। তবে কোনোটাই বেশিক্ষণ ভেজা অবস্থায় রাখা উচিত নয়। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ডায়াপার বদলে নিতে হবে। ঘরে বসে বারবার এই বদলে দেওয়াটা সহজ। তাই ভ্রমণের সময় এই কাজটি করার জন্য সঙ্গে অতিরিক্ত ডায়াপার রাখুন।

 

প্লাস্টিক প্যান্ট বাদ দিন

শিশুর দেহে যদি কাপড়ের ডায়াপার পরানো থাকে তাহলে তাকে আর ডায়াপারের ওপর প্লাস্টিক জাতীয় প্যান্ট পরানো ঠিক হবে না। কারণ, প্লাস্টিক আবরণ আর্দ্রতাকে ভেতরে আটকে রাখবে। এটি ডায়াপার র‍্যাশ আরো তীব্র করবে। প্লাস্টিকের প্যান্ট বা আবরণ ব্যবহারের পরিবর্তে মোটা কাপড়কে ডায়াপার ব্যবহার করা ভালো। কারণ এতে ত্বকের ঘাম নির্গমন প্রক্রিয়া ব্যাহত হয় না। যদি শিশুদের ডায়াপার বারবার পরিবর্তন করা হয়, তখন আর ডায়াপার অঞ্চলের পাউডার ব্যবহারের দরকার নেই। যদি পাউডার ব্যবহার করতেই হয়, তবে ‘প্লেইন কনস্টার্চ’ উপাদানের পাউডার ব্যবহারই উত্তম। অনেকেরই ধারণা, ডায়াপার খোলার পর ছোট্ট শিশুকে বেবি লোশন এবং পাউডার লাগাতে হবে। প্রকৃতপক্ষে এগুলো লাগিয়ে ডায়াপার র‍্যাশ প্রতিরোধ করা যায় না। বরং এতে ক্ষতি হয়। যেহেতু লোশন ও পাউডারের মধ্যে সুগন্ধি বস্তু ও অন্যান্য পদার্থযুক্ত থাকে তাই এগুলোর কারণেও ত্বকে র‍্যাশ উঠায়।

 

ডায়াপার বদলানোর পর যা করতে হবে

ডায়াপার বদলানোর পর পৃথিবীজুড়ে স্বীকৃত আদর্শ করণীয় হচ্ছে- শিশুর শ্রোণিদেশ ও তলপেট কোমল সাবানের সাহায্যে পানি দিয়ে ধুয়ে দিতে হবে। এভাবে প্রতিটি ডায়াপার বদলে দেওয়ার পর শিশুর ডায়াপার অঞ্চল পানি দিয়ে ধুয়ে দিতে হবে। কিন্তু অনেক মা-বাবাই এ ক্ষেত্রে কৃত্রিম এমন কিছু ব্যবহার (সুগন্ধিযুক্ত টিস্যু পেপার ও পরিষ্কার করার জন্য বিশেষ তৈরি উপকরণ) করেন যার কিছুটা শিশুর ত্বকে রয়ে যায়। এই ধরনের জিনিস ত্বকের জন্য উত্তেজক হতে পারে, বিশেষ করে ততক্ষণে শিশুর যদি ডায়াপার র‍্যাশ থেকে থাকে। ডায়াপার র‍্যাশ দ্রুত সেরে উঠবে যদি র‍্যাশ আক্রান্ত স্থানে খোলা বাতাস লাগতে দেওয়া যায়। এ জন্য ডায়াপার বদলে স্থানটি পরিষ্কার করার পর অন্তত ১০ থেকে ১৫ মিনিট ডায়াপারহীন অবস্থায় রাখুন।

ToguMogu App