শিশুর মধ্যে পানি পান করার অভ্যাস তৈরি করার ৫ বুদ্ধি
শিশুর সুস্বাস্থ্যের জন্য পানি খুবই প্রয়োজনীয়। পরিমিত পানি শরীরের তাপমাত্রা ঠিক রাখে, কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে, ইউরিনারি ইনফেকশন রোধ করে। পানি পানে অতিরিক্ত ক্যালোরি বা সুগার যোগ হওয়ার ঝামেলা নেই। কিন্তু আসল ঝামেলা বাঁধে শিশুকে পানি পান করানোর বেলায়। শিশুরা তৃষ্ণার্ত বোধ না করলে ঠিকমতো পানি পান করতেই চায় না। নিজে হয়তো মনে করে বলেও না। কখনো হয়তো ওদের ইচ্ছা করে না পানি খেতে।
আমাদের শিশুরা স্মার্ট। আমরা বাবা-মায়েরাও কি কম স্মার্ট? আমাদের বুদ্ধি কম থাকবে কেন? চলুন জেনে নেই ওকে দিয়ে পানি পান করানোর ৫ বুদ্ধি-
১। হাতের কাছেই পানির বোতল বা গ্লাস রাখাঃ
যখনই মনে হবে আপনার শিশুর পানি খাওয়া প্রয়োজন, তখনই ওর হাতে পানির গ্লাস বা কাপ ধরিয়ে দিন। শিশুদের পানি খাওয়াতে গেলে প্রায়ই ওরা বলে, "না, এখন খাব না", "পরে খাবো", "এখন তৃষ্ণা নেই" ইত্যাদি ইত্যাদি। এরকম সময় ওকে বলুন অন্তত ৪/৫ চুমুক খেতে। অনেক সময়ই দেখবেন চুমুক দেওয়ার পর শিশু বুঝতে পারে ও আসলেই তৃষ্ণার্ত ছিল। ৪/৫ চুমুক খেতে যেয়ে নিজেই অনেকখানি পানি খেয়ে নিবে। কিছু শিশু গ্লাস/কাপে পানি খেতে পছন্দ করে, ওদের ফিডার দেওয়ার বদলে গ্লাসেই দিন।
২। পানি পান করতে করতে খেলাঃ
অনেক শিশু পাইপ দিয়ে পানি খেতে পছন্দ করে। পানি খাওয়ার সময় পানিতে ফু দিয়ে বুদবুদ তোলে, এই খেলা খেলে ওরা মজা পায়। ওরা যদি এটা করে মজা পায় সাথে পানিও খায় তবে করতে দিন।
অনেক বাচ্চাই নরমাল, প্লেইন পানি খেয়ে মজা পায় না। খেতেও চায় না ঠিকঠাক। নরমাল পানির সাথেই সামান্য চিনি বা ফলের জুস মিশিয়ে দিন মাঝে মাঝে। কেনা ফলের জুস হলেও খুব বেশি সমস্যা নেই। কারণ, আপনি যখন অল্প করে ফলের জুস মেশাবেন, পানির পরিমাণটাই বেশি থাকবে। শিশুকে ঘরে লেবু বা কমলার শরবত খাওয়ানোর অভ্যাস করান। টক ফলের রস রুচিবর্ধক হিসেবে কাজ করে।
৩। আকর্ষণীয় পানির বোতল বা কাপঃ
Toddler বাচ্চারা কার্টুনওয়ালা মগ/কাপ/বোতল এগুলো খুব পছন্দ করে। শিশুর জন্য ওর পছন্দের কার্টুন ক্যারেক্টারের মগ/কাপ কিনে দিন। পানি দেওয়ার সময় বলুন, "নাও তোমার প্রিয় হ্যারি পটার/এলসা পানি!" দেখবেন খুশি খুশি খেয়ে নিবে।
৪। নিজে নিয়ে পানি খাওয়াঃ
২-৩ বছরের বাচ্চারা মোটামুটিভাবে টেবিল থেকে গ্লাস নিয়ে পানি খেতে পারে, যদি গ্লাসে পানি থাকেই আগে থেকে। অনেক বাচ্চা আবার ফিলটার থেকে পানি নিয়ে খেতে পারে। আপনার শিশুও এমন হয়ে থাকলে টেবিলে ওর গ্লাসে পানি দিয়ে রাখুন সবসময়। পানি খাওয়ার সময় ওকে বলুন নিজে নিয়ে খেতে। বড়দের মতো কাজ করতে বাচ্চারা কিন্তু ভালোইবাসে। আগ্রহ করেই খাবে। প্রথম প্রথম যখন ঠিকঠাক নিজে নিয়ে পানি খাবে তখন ধন্যবাদ দিন আর ওর প্রশংসা করে দিন।
৫। সব ধরণের পানীয় সব সময় ওর সামনে না রাখাঃ
শিশুকে খুব বেশি অপশন দিবেন না। একই সাথে পানি, জুস, দুধ, কোলা থাকলে, ও কোনটাই ঠিকমতো খেতে চাইবে না। চিনিযুক্ত কোলা খাওয়া বাচ্চারা পানি খেতে চায় না সহজে। দুধ/জুস আর পানি খাওয়ান। পানি যতটুকু গ্লাসে দিচ্ছেন, ততটুকু শেষ করার অভ্যাস করান।